চলে গেলেন বর্ষীয়ান রাজনীতিক পঙ্কজ বন্দ্যোপাধ্যায় – মেয়ে ফিরলে হবে শেষকৃত্য

ফেরা হল না রাজ্যের প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা পঙ্কজ বন্দ্যোপাধ্যায়ের। শুক্রবার দুপুরে বাড়িতেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর। আজ সকালে অসুস্থ হয়ে পড়ায় দক্ষিণ কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতাকে তাঁকে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেছিলেন।শোকবার্তা প্রকাশ করতে শুরু করে সমস্ত রাজনৈতিক শিবির। কিন্তু বাড়িতে আনার তাঁদের পারিবারিক চিকিৎসক পঙ্কজবাবুকে পরীক্ষা করে জানান, দেহে স্পন্দন চলছে, তিনি কোমায় রয়েছেন। তড়িঘড়ি আবার তাঁকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু ততক্ষণে যা হওয়ার হয়ে গেছে। ইমার্জেন্সি বিভাগেই চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন, শরীরে কোনও স্পন্দন নেই, তিনি প্রয়াত। আত্মীয় স্বজনের আসার অপেক্ষায় আপাতত পিস হাভেনে শায়িত পঙ্কজবাবুর মৃতদেহ। মেয়ে বিদেশ থেকে ফিরলে শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে তাঁর।

পঙ্কজবাবুর মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টুইট করে শোকজ্ঞাপন করেন। তাঁর এক সময়ের রাজনৈতিক আন্দোলনের সঙ্গী পঙ্কজ বন্দ্যোপাধ্যায়ের আত্মার শান্তি কামনা করে তিনি লেখেন, ‘তৃণমূলের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা পঙ্কজ-দার মৃত্যুতে আমি গভীর শোকাহত, তাঁর পরিবারের প্রতি শোকজ্ঞাপন করছি’।
বর্ষীয়ান রাজনীতিক পঙ্কজ বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলার রাজনীতিতে পরিচিত নাম। রাজনৈতিক জীবনের বেশীরভাগ সময় কাটিয়েছেন কংগ্রেসে। পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকে সাড়া দিয়ে তৃণমূলে যোগদান করেছিলেন পঙ্কজবাবু। ২০০১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের টিকিটে জয়ী হন টালিগঞ্জ আসন থেকে। সে বার রাজ্যের প্রধান বিরোধী দলনেতাও হয়েছিলেন তিনি।
জীবনের শেষ দিকে তৃণমূল ছেড়ে রাজনৈতিক জীবন থেকেই সন্ন্যাস নেন। সক্রিয় রাজনীতি থেকে অবসর নেওয়ার পরে পঙ্কজ বন্দ্যোপাধ্যায় কিছুটা অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। দক্ষিণ কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালটিতে সম্প্রতি গুরুতর অসুস্থতা নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন পঙ্কজবাবু। তাঁর অবস্থার ক্রমশ অবনতি হতে থাকে। বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিকল হয়ে পড়ায় শুক্রবার সকালে তাঁর মৃত্যু হয় বলে ওই হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছিল।

সেই খবর আসতেই বাংলার রাজনৈতিক শিবিরে শোকের ছায়া নেমে আসে। অরূপ বিশ্বাস, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সৌগত রায়-সহ একের পর এক তৃণমূল নেতা পঙ্কজবাবুর বাড়িতে পৌঁছন। শ্রদ্ধা জানান তাঁকে। আপাতত পঙ্কজবাবুর মৃতদেহ রাখা আছে পিস হাভেনে। বিদেশ থেকে মেয়ে ফিরলে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে বলে জানা গেছে।