জঙ্গলমহল থেকে পাঁচ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী তুলে নিতে চাওয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের সিদ্ধান্তে আপত্তি জানিয়েছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু শুনল না কেন্দ্র। উল্টে ছত্তিশগড়ে বিধানসভা ভোটের দোহাই দিয়ে জঙ্গলমহল থেকে সরানো হল ১২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। এমন ঘটনায় জঙ্গলমহলের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত মুখ্যমন্ত্রী।
২০০৯-এর মাঝামাঝি থেকে পর্যায়ক্রমে জঙ্গলমহলে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ঘাঁটি তৈরি হওয়া ইস্তক এত বেশী সংখ্যক কেন্দ্রীয় বাহিনী আর কখনও সরেনি বলে জানিয়েছেন রাজ্য পুলিশের কর্তারা।
রাজ্য সরকারের তরফে কেন্দ্রকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছিল, এক কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনীও ছাড়া সম্ভব নয়। কারণ, জঙ্গলমহল শান্ত থাকলেও, এলাকার সীমান্তবর্তী রাজ্য ঝাড়খণ্ড, ছত্তিশগড় ও ওড়িষ্যা এই তিন রাজ্যেই মাওবাদীরা অতি সক্রিয়। বাহিনী তুলে নিলে যে কোনও মুহূর্তে এই রাজ্যেও মাওবাদী আনাগোনা শুরু হয়ে যাবে। নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে তাতে। তাছাড়া পুলিশের তাড়া খেয়ে ঝাড়খণ্ড থেকে দুষ্কৃতীরা প্রায়ই বাংলায় ঢুকে গোলমাল পাকায়। তাদের আটকাতেও কেন্দ্রীয় বাহিনী রাজ্যের প্রয়োজন।
১ অক্টোবর ইস্টার্ন জোনাল কাউন্সিলের বৈঠকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গে বৈঠকে কেন্দ্রীয় বাহিনী প্রত্যাহার নিয়ে কেন্দ্রের একতরফা সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সরব হন মমতা। সেইসময় রাজনাথ কেন্দ্রীয় বাহিনী আর তোলা হবে না বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু তারপরেও জঙ্গলমহল থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনী সরিয়ে নেওয়া হল।
জানা গেছে, যে ১২ কোম্পানি বাহিনী উঠিয়ে নেওয়া হল, তারা ছিল পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া ও ঝাড়গ্রাম জেলায়। মাওবাদী সমস্যা মোকাবিলার জন্য কেন্দ্রের গৃহীত কর্মসূচীর অধীনে গোটা দেশে যতগুলি জেলা রয়েছে, তার মধ্যে এখন বাংলায় রয়েছে কেবল ঝাড়গ্রাম জেলা। বর্তমান পরিস্থিতিতে সেই ঝাড়গ্রামে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সংখ্যা ১০-এরও কমে এসে ঠেকল। রাজ্য পুলিশের এক কর্তার কথায়, ‘নির্বাচনের কারন দেখিয়ে ওই ১২ কোম্পানি বাহিনী তুলে নেওয়া হলেও ওদের ফেরার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে’।