শিক্ষকদের মুখে আটকে দেওয়া হল লিউকোপ্লাস্ট। বিশ্ববিদ্যালয়ের সমালোচনা তো দূর, কোনও বিষয়ে স্বাধীন মতামতও দিতে পারবেন না তাঁরা। আমলাদের সেন্ট্রাল সিভিল সার্ভিস (সিসিএস)-এর নিয়মের মতোই এখন থেকে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে পারবেন না কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)-র পক্ষ থেকেও জারি হয়েছে ওই নির্দেশ। যদিও মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর বলেছেন, ‘ জেএনইউ বা অন্য কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা কেড়ে নিতে চায় না কেন্দ্র’।
ওই নিয়ম চালু হওয়ার অর্থ, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাজকর্ম অপছন্দ হলেও কোনও শিক্ষক সে সব নিয়ে কিছু বলতে তো পারবেনই না, এমনকি শিক্ষা সংক্রান্ত কোনও বিষয়ে প্রকাশ্যে কারও সঙ্গে আলোচনা করারও অধিকার থাকবে না তাঁর। সিসিএস-এর আচরণবিধিতে আমলাদের যেমন রাজনৈতিক কার্যকলাপ, ধর্মঘট থেকে দূরে থাকতে হয় কিংবা সরকারের অনুমতি ছাড়া তাঁরা কোনও কিছু লিখতে পারেন না, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্যও এ বার তেমন নিয়মই চালু হচ্ছে। নতুন ফরমান বলছে, পরিচয় গোপন করেও সংবাদ মাধ্যমে মুখ খুলতে পারবেন না কোনও শিক্ষক। যদি একান্তই তিনি সংবাদ মাধ্যমের সামনে কথা বলার অনুমতি পান, তা হলেও সরকারের সমালোচনা করা যাবে না। মুখ খোলা চলবে না রাজনৈতিক বিষয়েও। পাশাপাশি, ধর্মঘট, ক্লাস বন্ধ রাখা রুখতে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়কে এসমা আইনের আওতায় আনা যায় কি না, তা খতিয়ে দেখতে একটি কমিটি গড়েছিল কেন্দ্র।
এবার এই ফরমানের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে জওহরলাল নেহরু ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন। জেএনইউয়ের শিক্ষক সংগঠন বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ হল নতুন ধরনের ধ্যানধারণার জন্ম দেওয়া এবং পড়ুয়াদের কাছে সে সব পৌঁছে দেওয়া। কিন্তু তার জন্য চিন্তা ভাবনার ও ভিন্নমত পোষণের স্বাধীনতা থাকা প্রয়োজন। ভিন্নমত গ্রহণ করারও স্বাধীনতা থাকা উচিত। কিন্তু নতুন আইন সেই স্বাধীনতাকে কেড়ে নিতে চলেছে’। বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সবুজকলি সেন বলেন, ‘কেন্দ্র থেকে এমন কোনও নির্দেশ এখনও বিশ্বভারতীর কাছে আসেনি। তবে বিষয়টি শুনেছি। নির্দেশ এলে সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে’।