কালীপুজোর আগের দিন, ৫ নভেম্বর দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে যাওয়ার অত্যাধুনিক রাস্তা স্কাইওয়াক প্রকল্পের উদ্বোধন হতে চলেছে। ৪০০ মিটার লম্বা এবং রাস্তা থেকে সাড়ে পাঁচ মিটার উঁচু। দশ মিটার চওড়া। সঙ্গে ত্রিমাত্রিক আলকসজ্জা। এমনই আধুনিক ধাঁচের স্কাই ওয়াক মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরেই উদ্বোধন হবে। ভারতে যা প্রথম। এমনিতেই কালীপুজোর সময় মন্দিরে হাজার হাজার ভক্তের সমাগম হয়। ফলে, কালীপুজোর আগে এই প্রকল্পের উদ্বোধন হলে ভক্তদের মন্দিরে যাতায়াতে আর কোনও সমস্যা থাকবে না। দক্ষিণেশ্বর মন্দির চত্বরেই চার বছর আগে মুখ্যমন্ত্রী এসে এই প্রকল্পের শিলান্যাস করেছিলেন। সেই মন্দির চত্বরেই এবার অনুষ্ঠানের আয়োজন থাকছে। সেখানে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী এই প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন। এই প্রকল্প চালু হয়ে গেলে ভক্তরা উপর দিয়ে যাতায়াত করবেন। তার জন্য একাধিক সিঁড়ি, এসকালেটর, লিফটের ব্যবস্থা রয়েছে। সেখানে দু’দিকে দোকানও থাকছে। আর প্রকল্পের নীচের রাস্তা দিয়ে শুধু যানবাহন চলাচলের জন্য রাখা হয়েছে। ফলে, যানজট হওয়ার আর কোনও সম্ভাবনা থাকবে না।
দক্ষিণেশ্বর মন্দির অছি পরিষদের সম্পাদক কুশল চৌধুরি বলেন, স্কাইওয়াক মন্দিরে যাওয়ার অত্যাধুনিক পথ। এটা জাতীয় সম্পত্তি। তাই রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব সকলের। এই প্রকল্প চালু হওয়ার ফলে ওই এলাকায় আগামী ৫০ বছরে যানবাহন চলাচলের আর কোনও সমস্যা হবে না বলে আমার ধারণা। আর কালীপুজোর দিন হাজার হাজার ভক্ত সমাগম হয়। তার আগেই প্রকল্প চালু হওয়ায় ভক্তদের আর মন্দিরে আসতে নাকাল হতে হবে না। তিনি আরও বলেন, দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের প্রতিষ্ঠা ও ১৫০ বছরের তার ইতিহাস আলো ও ধ্বনির মাধ্যমে ভক্তদের কাছে তুলে ধরা হবে। সেই প্রকল্পের শিলান্যাসও সেদিন মুখ্যমন্ত্রীর হাতেই হবে।
স্কাইওয়াক প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ার আগে দক্ষিণেশ্বর স্টেশন থেকে রানি রাসমণি রোড ধরে ভক্তরা মন্দিরে যাতায়াত করতেন। ওই রাস্তা দিয়ে যানবাহন চলাচল করত। এমনিতেই রাস্তাটি সংকীর্ণ। দু’দিকে লাইন দিয়ে দোকান ছিল। ফলে, সব সময় সেখানে যানজট লেগেই থাকত। আর বছরের বিশেষ বিশেষ সময় সেই যানজট আরও তীব্র আকার ধারণ করত। সেই সমস্যা থেকে মুক্তি দিতেই রাজ্য সরকার এই প্রকল্পের কাজে হাত দেয়। প্রথমদিকে দোকানদারদের বাধায় প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়া নিয়ে অনেক টালবাহানা হয়েছিল। পরবর্তীকালে দ্রুত গতিতে কাজ শুরু হয়।
গত মাসেই প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষ হয়ে গিয়েছিল। শুধু বাকি ছিল ওজন মাপা পরীক্ষা। গত মাসের মাঝামাঝি থেকে শেষদিক পর্যন্ত সেই কাজ হয়েছে। মহালয়ার আগেই ওজন পরীক্ষায় এই প্রকল্প পাশ করে গিয়েছে। ফলে, এই প্রকল্পের উদ্বোধন হওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা ছিল। সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার পরপরই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। মুখ্যমন্ত্রীর থেকে সবুজ সংকেত পেয়ে উদ্বোধনের দিন ধার্য করা হয়েছে। কামারহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান গোপাল সাহা বলেন, প্রকল্পের উদ্বোধন নিয়ে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তিনি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন। তাঁর সবুজ সংকেত পাওয়া গিয়েছে। সেই মতো আগামী ৫ নভেম্বর, বিকাল ৪টেয় কালী পুজোর আগের দিন প্রকল্পের উদ্বোধনের দিন ধার্য করা হয়েছে। সেই মতো সবরকম প্রস্তুতি চলছে। তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয়, প্রকল্পের সামনের আইল্যান্ডে নেতাজি না রাসমণির মূর্তি বসবে? তিনি বলেন, এখনও পর্যন্ত জায়গাটি ফাঁকা রাখা রয়েছে। এই বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।