বাজির আওয়াজেই শোনা যায়নি ট্রেনের হর্ন। অমৃতসরের জোড়া ফটকে দশেরার সন্ধ্যায় ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনার পর এমনই বক্তব্য প্রত্যক্ষদর্শীদের।
পাশাপাশি দুর্ঘটনা ঘিরে উঠে এল একঝাঁক প্রশ্ন। রাজ্য প্রশাসন এবং রেল কর্তৃপক্ষের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব স্পষ্ট। প্রশ্ন উঠেছে, কী ভাবে অরক্ষিত রেল ক্রসিংয়ের পাশে এই অনুষ্ঠানের অনুমতি দেওয়া হল? কেন লাইনে এত লোক থাকা সত্ত্বেও সিগন্যাল সবুজ ছিল? কেন গেটম্যান ট্রেন চালককে লাইনে এত লোক দাঁড়িয়ে রয়েছে, সে ব্যাপারে কিছু জানালেন না? সেসময় দায়িত্বে থাকা দুই স্টেশনমাস্টার, রেলের মোটরম্যান এবং গেটম্যানের ভূমিকা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। দুই ট্রেনের চালককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানা গেছে।
যদিও গাফিলতির কথা স্বীকার করতে চায়নি রেল। তাদের তরফে জানানো হয়েছে, উৎসবের ব্যাপারে কোনও তথ্য অবহিত করা হয়নি রেলকে। এ ব্যাপারে আয়োজকদের গাফিলতির দিকেই আঙুল তুলছে রেল। রেলের ডিআরএম জানিয়েছেন, উৎসবের কোনও খবর আমাদের কাছে ছিল না। লাইনে লোক দেখার পর ডিএমইউ ট্রেনের চালক ব্রেকও কষেছিলেন। ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার বেগ থেকে গাড়ির গতিও কমে গিয়েছিল ৬৮ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা। ৬০০ থেকে ৭০০ মিটার দূরে থাকলে তবেই ট্রেন থামানো যেত। এক্ষেত্রে চালক হর্নও বাজিয়েছিলেন। তবে এ ব্যাপারে পূর্ণাঙ্গ তদন্তই হবে, এমনটাই আশ্বাস দিয়েছে রেল।
এক প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ান অনুযায়ী, সন্ধ্যে ৬ টা বেজে ১৫ মিনিটে রাবণের পুতুলে আগুন ধরানো হয়। সেসময় রাবণ দহন দেখতে ওই লাইনের পাশে ভিড় করেছিলেন উৎসুক জনতা। অনেকেই আবার আত্মীয় পরিজনদের নিয়ে এসেছিলেন। নিরাপদ দূরত্বে থেকে রাবণ দহন চাক্ষুষ করতে অনেকেই রেল লাইনের উপর চলে আসেন। তীব্র আওয়াজে ফাটতে থাকে বাজি। কাঠামো ভেঙে পড়তে পারে। আর তাই নিরাপদ থাকতে অনেকেই রেল লাইনের উপরে চলে আসেন। ঠিক তখনই দ্রুতগতিতে আপ এবং ডাউন লাইনে এসে পড়ে দুটি ট্রেন। হর্ন দিলেও বাজি এবং বাজনার শব্দে ঢেকে যায় ট্রেনের হর্নের আওয়াজ। আর তারপর মাত্র কয়েক সেকেণ্ডের ব্যবধানে ঘটে যায় ভয়াবহ দুর্ঘটনাটি।
গোটা ঘটনায় দেশজুড়ে নেমেছে শোকের ছায়া। পাঞ্জাবে একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক পালন করা হচ্ছে। বন্ধ রাখা হয়েছে স্কুল-কলেজ।