চতুর্থীর দিন ‘নবনীড়’-এর বৃদ্ধাবাসের আবাসিকদের জন্য শাড়ি-মিষ্টি নিয়ে তাঁদের সঙ্গে দেখা করে এসেছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার পুজো উপহার পাঠালেন বাংলার প্রাক্তণ মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ও তাঁর স্ত্রী মীরা ভট্টাচার্যকে। বুদ্ধদেবের জন্য পাজামা-পাঞ্জাবি এবং স্ত্রী মীরার জন্য শাড়ি পাঠিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তাঁরা উপহার গ্রহণ করে মমতাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এমন সৌজন্য বিনিময় বাংলার রাজনীতির পক্ষে শুভ ইঙ্গিত বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
অবশ্য ২০১১ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বাংলা এই সৌজন্যের রাজনীতি দেখছে। মমতার হাত ধরেই এই সৌজন্যের শুরু। প্রথমবার মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ গ্রহণের সময়েই বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, বিমান বসুদের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন মমতা। নিমন্ত্রণ জানাতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে বুদ্ধবাবুর ফ্ল্যাটে পাঠিয়েছিলেন তিনি। সেই আমন্ত্রণ গ্রহণ করে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে হাজির হন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, বিমান বসুরা। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর কাছেও বহুবার গিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর শরীর সম্পর্কে খোঁজ খবর নিতেন। সেটা মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আগেই। জ্যোতিবাবুর অনুরোধেই ইন্দিরা ভবনে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
২০১১ সালে রাজনৈতিক পটপরিবর্তন ঘটে। কিন্তু কখনওই সৌজন্যের রাস্তা থেকে সরে আসেননি মা-মাটি-মানুষের নেত্রী। বুদ্ধদেববাবুর অসুস্থতার খবর শুনে ছুটে গিয়েছেন। স্বাস্থ্যের খোঁজ নিয়েছেন। স্ত্রী মীরাদেবীকে সবরকম সাহায্যের ব্যাপারে আশ্বস্ত করেন। এই রাজনৈতিক শিষ্টাচার প্রশংসিত হয়েছিল বাংলার রাজনীতিতে।
এরপর বুদ্ধদেববাবুর পাম অ্যাভিনিউর সরকারি আবাসনে গিয়ে বেহাল অবস্থা দেখে তা তৎক্ষণাৎ তা মেরামতির নির্দেশ দিয়েছিলেন মমতা। সেই থেকে বছরখানেক ধরে প্রায়শই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর শরীরের খোঁজ নেন তিনি। এবার পুজোয় পাঠালেন উপহার। বহু বছর ধরেই পুজোর আগে বহু মানুষকে উপহার দেন মমতা। দলের মন্ত্রী, নেতা, সাংবাদিক বা ঘনিষ্ঠদের শুধু নয়, বহু বিশিষ্টজন এবং সব দপ্তরের প্রধান সচিবদেরও তিনি পুজো উপহার পাঠিয়েছেন। এক সিনিয়র আইএএস কর্তার কথায়, ‘ম্যাডামের এই পার্সোনাল টাচ, সত্যি অনবদ্য। অবাক করার মতো। আগে এমন আন্তরিকতা আমরা কখনও পাইনি’।