বরাবরই শিল্প সংস্কৃতির কদর করে থাকেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলার মত আর কোনও রাজ্যে বোধহয় শিল্পীরা এত স্বাধীনতা ও সুযোগ সুবিধা পান না।
২০১২ সালে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে রবীন্দ্র সরোবরে শহরের সেরা দুর্গাপুজোগুলির প্যান্ডেল ও প্রতিমা সংরক্ষণ করে রাখার জন্য একটি গ্যালারি তৈরি হয়েছিল। তাঁর উদ্যোগে বাংলার প্রতিভাবান শিল্পীর হাতে গড়া নানান সৃষ্টিকে বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দেওয়ার জন্যই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
ইতিমধ্যেই উৎসবে মাতোয়ারা বাংলা। তারই মাঝে সেই গ্যালারিকে ঢেলে সাজানোর যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, সেই কাজ প্রায় শেষের দিকে। কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটির (কেএমডিএ) উদ্যোগে চলছে এই কাজ৷
প্রতি বছর শহরে নামজাদা পুজোর প্যান্ডেল–প্রতিমা দেখার জন্য অগণিত মানুষের ভিড় উপচে পড়ে। ভিড়ের কারণে অনেকে দুর্গাপ্রতিমা ও শিল্পীর হাতে গড়া নানা শিল্পসৃষ্টি দেখা থেকে বঞ্চিত হন। এই গ্যালারি তৈরির পর থেকে পুজোর পরও শহরের সেরা প্রতিমা-প্যান্ডেল দেখার সুযোগ পান সাধারণ মানুষ। একইসঙ্গে শহরে আসা দেশি-বিদেশি পর্যটকরাও রাজ্যের সব থেকে বড় উৎসবের ঐতিহ্য এবং বাংলার শিল্পীদের নৈপুণ্যের পরিচয় পান।
গ্যালারিটি তৈরির প্রথম বছর থেকেই মানুষজনের উৎসাহ দেখা যায় চোখে পড়ার মতো। উৎসবের মরশুম শেষ হতেই শহরের সেরা পুজোর মণ্ডপগুলির শিল্পকলা ও প্রতিমা নিজেদের চোখে চাক্ষুষ করতে উৎসাহী দর্শকদের ভিড় হয় প্রতিদিন। এমনকী কলকাতায় ঘুরতে আসা দেশি-বিদেশি পর্যটকরাও দেখতে আসেন। গ্যালারিতে পর্যটকদের ভিড় বেশি দেখা যায় অক্টোবর থেকে জানুয়ারি মাস পর্যন্ত।
গ্যালারিটিকে আরও আকর্ষনীয় করে তুলতে নতুন করে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছিল কেএমডিএ। কেএমডিএ-র এক আধিকারিক জানালেন, নতুন করে সাজানো হচ্ছে শহরের এই আর্ট গ্যালারিটি। দর্শকদের কাছে আরও আকর্ষণ বাড়ানোর জন্য রাজ্যের শিল্পীদের দিয়ে গ্যালারির সিলিং, আশপাশের পরিকাঠামো নতুন ভাবে তৈরি করা হয়েছে। এখানে সাজানোর জন্য টেরাকোটার কাজও ব্যবহার করা হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, ৪ হাজার ঘণ্টা দিয়ে গ্যালারির সিলিং সাজানোর পাশাপাশি গ্যালারির প্রবেশপথকেও আরও আকর্ষণীয় করা হয়েছে।
এখন শুধু শিল্পীদের হাতে গড়া প্রতিমা আসার পালা। একসঙ্গে ওই গ্যালারিতে ১০টি প্রতিমা সংরক্ষণ করা যাবে। সূত্রের খবর, আর্ট গ্যালারিটি নতুনভাবে সাজাতে খরচ হয়েছে ২ কোটি টাকা।