দেশের শীর্ষ আদালত মোদী সরকারের থেকে রাফাল সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য চেয়ে পাঠিয়েছে। তার ওপর সামনে এসেছে ফরাসি সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট। পরপর দুটি ইস্যু হাতে পেয়ে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী। প্রধানমন্ত্রীকে সরাসরি ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ বলে কটাক্ষ করলেন তিনি। জানিয়ে দিলেন, রাফাল চুক্তির ‘দুর্নীতি’ ধামাচাপা দিতেই জরুরি ভিত্তিতে ফ্রান্স রওনা হয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। সাফ বলে দিলেন, ‘দেশের বেকারেরা চাকরি খুঁজছেন। আর প্রধানমন্ত্রী আম্বানিদের চৌকিদারি করছেন’।
ফ্রান্সের সংবাদমাধ্যম ‘মিডিয়াপার্ট’ ড্যাসল্টের এক প্রাক্তন আধিকারিকের উদ্ধৃতি পেশ করে দাবি করেছে, ভারতের পক্ষ থেকে অনিল আম্বানির রিলায়েন্সের সঙ্গে চুক্তি করতে রীতিমতো শর্ত দেওয়া হয়েছিল। যার অর্থ হল, ভারতে রাফাল তৈরিতে রিলায়েন্সের সঙ্গে অফসেট চুক্তি না করলে রাফাল যুদ্ধবিমান তৈরির বরাত পেত না ড্যাসল্ট। এই সূত্র ধরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রাহুল জানান, ৩৬টি রাফালের বরাতের ‘বিনিময়ে’ তারা অনিল আম্বানির সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করতে বাধ্য হয়েছিল। তাঁর কথায়, ‘অনিল অম্বানির পকেটে এই ৩০ হাজার কোটি টাকার বরাত প্রধানমন্ত্রী ভরে দিয়েছেন। উনি বলেছিলেন, আমি প্রধানমন্ত্রী হতে চাই না, চৌকিদার হতে চাই। এখন জানা গেল, উনি অনিল অম্বানীর চৌকিদার!’ তরুণ প্রজন্মের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আপনারা চাকরি খুঁজছেন। কৃষকেরা নিপীড়িত হচ্ছেন। আর আমাদের প্রধানমন্ত্রী অনিল অম্বানীর চৌকিদারি করছেন’!
একটি ফরাসি সংবাদমাধ্যমে এর আগে ফ্রান্সের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ বলেছিলেন, মোদী সরকারই অনিলের সংস্থাকে বেছেছিল। ওই সংবাদমাধ্যমেই প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, ড্যাসল্টের দ্বিতীয় শীর্ষ কর্তা , ২০১৭-র মে মাসে সংস্থার বৈঠকে বলেন, অম্বানীর সংস্থার সঙ্গে চুক্তি বাধ্যতামূলক। পরে অবশ্য এক বিবৃতিতে তারা জানায়, নিজেদের পছন্দেই অনিলের সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করেছিল তারা।
প্রসঙ্গত, রিলায়েন্সের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে নাগপুরের কোম্পানিতে ড্যাসল্টের একটি অসামরিক বিমানের যন্ত্রাংশ তৈরির চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। কিন্তু, কংগ্রেস-সহ অন্য বিরোধীদের অভিযোগ, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ‘হিন্দুস্থান অ্যারোনটিক্স লিমিটেড’কে বাদ দিয়ে কেন রিলায়েন্সকে এই বরাত দেওয়া হল? সুপ্রিম কোর্টও রাফাল চুক্তির প্রতিটি পদক্ষেপ সম্পর্কে যাবতীয় নথি তলব করেছে।