সপ্তাহ খানেক আগেই অভিনেতা নানা পাটেকরের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনেছেন বলিউড অভিনেত্রী তনুশ্রী দত্ত। আপাতত সেই ইস্যুতেই সরগরম বলিউড। ইতিমধ্যেই তনুশ্রীর পাশে দাঁড়িয়ে মি টু আন্দোলনে সরব হয়েছে বলিউড এবং বুদ্ধিজীবীদের একাংশ। তার মধ্যে একজন টু স্টেটস, হাফ গার্লফ্রেন্ডের মত বেস্টসেলার নভেলের লেখক চেতন ভগত। এ বার সেই চেতনের বিরুদ্ধেই যৌন হেনস্থার অভিযোগ উঠল! এক মহিলার প্রকাশ করা হোয়াটস অ্যাপ স্ক্রিনশটে এবার অস্বস্তিতে লেখক স্বয়ং।
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় চেতনের সঙ্গে এক অজ্ঞাত পরিচয় মহিলার হোয়াটস অ্যাপ চ্যাটের স্ক্রিনশট প্রকাশ হয়। মুহূর্তেই তা ভাইরাল হয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। নেটিজেনদের মধ্যে তা নিয়ে শুরু হয়ে যায় আলোচনা। অনেকেই চেতনের চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলতে থাকেন। অনেকে আবার বলেন, চেতন হয়ত কোনও ষড়যন্ত্রের শিকার। তবে সবাইকে অবাক করে দিয়ে এই পরিস্থিতিতে মুখ খুললেন লেখক নিজেই।
বিতর্ক শুরু হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরে, তড়িঘড়ি নিজের ফেসবুকে একটি পোস্ট করে সেই কথোপকথনের সত্যতা স্বীকার করে নিলেন চেতন। তিনি জানিয়েছেন, কয়েক বছর আগে একটি মেয়ের সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে ওই বাক্যালাপ হয়েছিল তাঁর। চেতন এও জানিয়েছেন, নিজের ভুল বুঝতে পেরে ক্ষমাও চেয়ে নিয়েছিলেন তিনি। এমনকি গোটা ঘটনার কথা নিজের স্ত্রী অনুষাকে জানিয়ে তাঁর কাছেও ক্ষমা চেয়েছেন চেতন।
নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে চেতন লেখেন, ‘ঘটনাটা কয়েক বছর আগেকার। আমি প্রথমেই সেই মহিলার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। আপনাদের যদি আমার বলা ওই কথাগুলো ভুল বলে মনে হয় তা হলে আমি ক্ষমাপ্রার্থী। আশা করি আমার ক্ষমাপ্রার্থনা আপনারা মেনে নেবেন। স্ক্রিনশটের বক্তব্য অনুযায়ী তখন আমি বিবাহিত। আমি সেই মহিলার সঙ্গে বেশ কয়েকবার দেখা করি। একটা সময় পর আমরা ভাল বন্ধুও হয়ে যাই। আমি সব সময় ওর প্রতি টান অনুভব করতাম। কারণ ও ছিল একজন ভাল মনের মানুষ । তাই হয়ত কিছুদিনের জন্য আমি ভুল পথে চলে গেছিলাম।’
ভাইরাল হওয়া স্ক্রিনশটটিতে দেখা যাচ্ছে, চেতন সেই মহিলার উদ্দেশ্যে লিখেছেন, ‘তুমি মিষ্টি, মজাদার ও ভাল মনের মানুষ। তাই আমি ঠিক করেছি, তোমার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা করব। তুমিও কি আমার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হতে চাও? কিছু তো বলো।’ সেই মহিলা তার উত্তরে বলেন, ‘তুমিও আর পাঁচটা বিবাহিত পুরুষের মত বলছ কেন? তুমি তো তাঁদের থেকে আলাদা হতে পারো। তুমি কিন্তু এরকম নয়।’ স্ক্রিনশটে দেখা যায়, এর পরও চেতন প্রেম নিবেদনের চেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকেন। কিন্তু শেষমেশ সেই মহিলা চেতনকে নিজের অবস্থান বুঝিয়ে দেন।
‘ঘনিষ্ঠ হতে চাই’-এর প্রসঙ্গে চেতনের সাফাই, ‘এই নির্দিষ্ট কথাটা কোনও অন্য আলোচনা থেকেও আসতে পারে। তবে আমি বিষয়টি নিয়ে পুরোপুরি নিশ্চিত নই, কারণ এটা অনেক আগের ঘটনা। তবে এটুকু মনে আছে যে সে সময় আমার মহিলাদের নিয়ে একটা বই প্রকাশ হওয়ার কথা ছিল। সেই বিষয়ে আলোচনা হতে হতে পরিস্থিতি অনুযায়ী আমি ওই কথাটা বলে থাকতে পারি। তবে আমি সাফ জানাতে চাই যে, আমাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক বা কোনও রকম অশ্লীল ছবির আদান-প্রদান ছিল না। এবং পরে আমি তাঁর নম্বরও মুছে ফেলেছিলাম আমার ফোন থেকে। এখন তাঁর সঙ্গে আমার আর যোগাযোগও নেই কোনও।’
চেতন আরও লিখেছেন যে, ‘পরে যদিও আমার মনে হয়েছিল, আমি বিবাহিত। নিজের অনুশোচনা বোধ থেকেই আমি আমার স্ত্রী অনুষাকে সবটা জানিয়েছিলাম। ওর কাছে ক্ষমাও চেয়ে নিয়েছি।’
