ফাঁস হওয়া বিজেপি নেতা মুকুল-কৈলাসের ফোনালাপের অডিও টেপ ঘিরে ঝড় উঠেছে রাজ্য রাজনীতিতে। সেই রেশ কাটার আগেই আছড়ে পড়ল আরও একটি অডিও-ঝড়। শনিবার রাতে জনৈক ইউটিউবার একটি অডিও টেপ https://youtu.be/1yFHVQ9XUcw আপলোড করেছেন। সেই ফোনালাপে পাওয়া কণ্ঠস্বর দুটির একটি বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা পশ্চিমবঙ্গে দলের পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়র এবং অন্যটি মুকুল রায়ের সঙ্গে হুবহু মিলে যায় । ‘এখন খবর’ এই অডিও ক্লিপের সত্যতা যাচাই করেনি । তবে এই ফোনালাপ থেকে যা উঠে এল তা বিস্ফোরক।
সাড়ে তিন মিনিটের ফোনালাপে জুড়ে চলেছে চক্রান্ত! তৃণমূলকে কীভাবে ‘খতম’ করা যায়, সেই নিয়ে বিজেপি নেতা মুকুল রায় ও কৈলাস বিজয়বর্গী আলোচনা করেছেন ফোনে। মিনিট চারেকের টেলিফোন আলাপে আপাত ভাবে বোঝা যায়, ফোন করেছিলেন মুকুল। কৈলাসকে তিনি জানান, ‘দু’কোটি চাই। ৫০ লাখ অ্যাডভান্স, হংকংয়ে পাঠাতে হবে। ২০ দিন পরে বাকি ১ কোটি ৫০ লাখ’।
ফোনালাপের শুরুতেই কোনও এক ‘ম্যাথু’র কথা তুলেছেন মুকুল। কৈলাসকে জানিয়েছেন, ‘ওর কাছে একশো চব্বিশ ঘণ্টার একটা ডকুমেন্টরি আছে। সেটা প্রকাশ পেলেই তৃণমূল শেষ। এই জন্যই ও আমাকে আপনার সঙ্গে কথা বলতে বলেছে।’ এরপর কৈলাস জানতে চেয়েছেন, ‘কত টাকা?’ তখন মুকুল জানিয়েছেন টাকার অঙ্ক। এমনকি মুকুল এও বলেন, ‘যদি তৃণমূলকে ফেলার জন্য সেটা যথেষ্ট হয় তাহলে ঘরবাড়ি বেচকেভি হাম ও জোগার করেঙ্গে।’ কথাবার্তার এক পর্যায়ে মুকুল বলেন, ‘ওর সঙ্গে কথা বলে আপ হামকো সিগন্যাল দেঙ্গে তো হাম অ্যাকশন লেঙ্গে।’ ফোনেই কিছুক্ষণ ভেবে নিয়ে রাজি হয়ে যান কৈলাস। জানিয়ে দেন, ‘এ জুয়া খেলনা চাহিয়ে’। প্রার্থিত কথাটা শুনে উত্তেজিত হয়ে পড়েন মুকুল। জোর দিয়ে বলেন, ‘অবশ্যই খেলব। জুয়া খেলার জন্য প্রস্তুত আছি। লেকিন একবার তো আপকে সাথ বাত হোনা চাহিয়ে।’ তারপরেই কৈলাস ২৬ তারিখে কলকাতা আসার কথা জানান। বোঝা যাচ্ছে, কলকাতায় এসে এই নিয়ে পাকা কথা বলবেন তাঁরা।
শুক্রবার শিলিগুড়ি জার্নালিস্টস ক্লাব আয়োজিত ‘মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড’ অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেছিলেন, ‘বিজেপির প্রচুর টাকা আছে। টাকার প্যাকেট পাঠিয়ে মুখ বন্ধ করতে চায়।’ চব্বিশ ঘণ্টা কাঁটার আগেই প্রমাণ হয়ে গেল মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগের সত্যতা। ফাঁস হওয়া প্রথম অডিও টেপে চিটফাণ্ড কাণ্ডে প্রভাব খাটাতে চেয়ে সিবিআই অফিসারদের দিয়ে রাজ্যের চার আইপিএস অফিসারকে ‘ভয়’ দেখাতে চেয়েছিলেন মুকুল। পাশাপাশি, মতুয়া সম্প্রদায়কে ‘হাতে’ আনতে চেয়েও আলোচনা করেছিলেন দুজনে। এবার ফাঁস হওয়া দ্বিতীয় টেপে উঠে এল, টাকা ছড়িয়ে তৃণমূলকে বাগে আনতে চেয়ে দুই শীর্ষ বিজেপি নেতার ষড়যন্ত্র। বিজেপির দুই শীর্ষ নেতার ফাঁস হওয়া দ্বিতীয় অডিও ক্লিপ মমতা ও বিরোধীদের সেই অভিযোগকেই আবারও সত্য প্রমাণ করে দিল। বাংলা বিরোধী ষড়যন্ত্র হচ্ছে তাও প্রমাণ হয়ে গেল।
[embedyt] https://www.youtube.com/watch?v=1yFHVQ9XUcw[/embedyt]
(এখন খবর এই অডিও ক্লিপের সত্যতা যাচাই করেনি)