ভারতের প্রধান বিচারপতি হিসাবে শপথ নিলেন জাস্টিস রঞ্জন গগৈ। বুধবার ৩ অক্টোবর ৪৬তম প্রধান বিচারপতি পদে দায়িত্ব গ্রহণ করলেন তিনি। রাষ্ট্রপতি ভবনে তাঁকে শপথবাক্য পাঠ করান রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং এবং এইচ ডি দেবেগৌড়া, লোকসভায় কংগ্রেসের নেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে, তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ও ডেরেক ও’ব্রায়েন সহ একাধিক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও বিশিষ্টরা এদিনের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতিদের মধ্যেও অনেকেই ছিলেন অতিথিদের আসনে।
গত ২ অক্টোবর প্রধান বিচারপতির পদ থেকে অবসর নিয়েছেন দীপক মিশ্র। ভারতীয় সংবিধানের নিয়মানুযায়ী, প্রধান বিচারপতি যখন অবসর নিয়ে নেন, তারপর সেই আসনে বসেন তার পরবর্তী সিনিয়র বিচারপতি। সেই নিয়ম মেনেই কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রকের কাছে রঞ্জন গগৈ-এর নাম সুপারিশ করেছিলেন বিচারপতি দীপক মিশ্র। প্রসঙ্গত, ভারতের উত্তর-পূর্ব অঞ্চল থেকে তিনিই প্রথম ব্যক্তি যিনি প্রধান বিচারপতি পদে নিযুক্ত হলেন।
রঞ্জন গগৈ হলেন আসামের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা কেশব চন্দ্র গগৈ এর একমাত্র পুত্র। ১৯৫৪ সালের ১৮ নভেম্বর আসামের ডিব্রুগড়ে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। আইনজীবী হিসেবে ১৯৭৮ সালে তাঁর নাম নথিভুক্ত হয়। ২০১২ সালে সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি পদের দায়িত্ব নেন তিনি৷ মৃদুভাষী ও কড়া আইনজীবী হিসেবে পরিচিত গগৈ, ১৯৭৮ সালে আইনজীবী হিসেবে কেরিয়ার শুরু করেন। সংবিধান, আয়কর ও কর্পোরেট সংক্রান্ত বিষয় নিয়েই গুয়াহাটি হাইকোর্টে কাজ করেছেন। ২০১০ সালে পাঞ্জাব এবং হরিয়ানা হাইকোর্টে বিচারপতির পদে নিযুক্ত হন। ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিযুক্ত হন। ২০১২ সালের এপ্রিলে সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি হিসাবে যোগদান করেন। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রর বিরুদ্ধে যে ৪ জন বিচারপতি বিদ্রোহ করেছিলেন রঞ্জন গগৈ তাঁদের মধ্যে একজন৷ নাগরিকপঞ্জি সংক্রান্ত বিশেষ ডিভিশন বেঞ্চের দায়িত্বেও ছিলেন তিনি।
ট্যুইট করে প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ট্যুইটে মমতা লিখেছেন, প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ দায়িত্ব গ্রহণ করায় আমরা সকলে গর্বিত। অভিনন্দন রইল।
প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ জানিয়েছেন, জনস্বার্থ সংক্রান্ত মামলার শুনানি হবে তাঁর বেঞ্চে এবং সিনিয়র বিচারপতি মদন বি লোকুরের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে। মামলার শুনানির ক্ষেত্রে কোনও তাড়াহুড়ো করতে দেওয়া হবে না। পরিস্থিতি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ২০১৯ সালের নভেম্বর মাস পর্যন্ত এই পদের দায়িত্বভার সামলাবেন তিনি।