মতুয়ারা শরণার্থী নন। জন্মসূত্রেই তাঁরা ভারতীয় নাগরিক। জাতীয় নাগরিকপঞ্জী বিতর্কে বিজেপির শরণার্থী তত্ব খারিজ করে রাজ্যের মতুয়া মহলে এবার এই দাবিই তুলতে চলেছে তৃণমূল।
সামনেই লোকসভা নির্বাচন। তাই ভোটের মুখে মতুয়াদের মন পেতে ব্যাগ্র বিজেপি তাদের শরনার্থীর মর্যাদা দিতে চায়। সেই লক্ষ্যে উত্তর ২৪ পরগনার ঠাকুরনগরে মতুয়া সমাবেশের আয়োজন করেছিল বিজেপি। সেখানেই দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয়, মতুয়াদের অনুপ্রবেশকারী নয়, শরণার্থী হিসাবে বিবেচনা করা হবে বলে ঘোষণা করেছেন।
উল্লেখ্য, রাজ্যের ২৯৪টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে ৬৭টিতে মতুয়া ভোটই প্রধান শক্তি। বাংলাকে টার্গেট করা মোদী-শাহ জুটি এবার মতুয়াদের মন পেতে চাইছেন। তাই খাড়া করা হয়েছে শরনার্থী তত্ব। কিন্তু অঙ্কুরেই এই তত্ব খারিজ করে দিয়েছে তৃণমূল। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, আগামী ১৫ নভেম্বর মতুয়া মহাসঙ্ঘের প্রধান বীনাপানিদেবী তথা বড়মার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন কমিটির প্রধান পৃষ্ঠপোষক হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং। আর প্রথম থেকেই তিনি নাগরিকত্ব নিয়ে মতুয়াদের মনের কথাই বলে আসছেন। এতেই ভয় পেয়েছে বিজেপি। মতুয়াদের ভোট তৃণমূলের দখলে চলে যাওয়ার আশঙ্কা চেপে বসেছে তাদের। তাই তড়িঘড়ি শরণার্থী তত্ব খাড়া করে মতুয়াদের মন পেতে চাইছে বিজেপি।
কিন্তু বিজেপির শরণার্থী তত্বে রাজি নয় মতুয়ারা। বহুদিন ধরেই তাঁরা ভারতীয় নাগরিকত্বের দাবি করে আসছেন। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অনেক আগেই বলেছিলেন, যারা এদেশে জন্মেছেন তাঁরা সবাই ভারতীয় নাগরিক। এবারও বিজেপি শিবিরের এই শরণার্থী তত্ত্ব খারিজ করে দিয়েছেন মমতা। সাফ বলে দিয়েছেন, ‘জন্মগত অধিকারে মতুয়ারাও ভারতীয় নাগরিক’।
খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের অভিযোগ, ‘ভোট আসতেই মতুয়াদের নিয়ে মায়াকান্না শুরু করে দিয়েছে বিজেপি। একদিকে এনআরসি-র দাবি তুলছে অন্যদিকে মতুয়াদের শরণার্থী ঘোষণা করে জলঘোলা করতে চাইছে’। তাঁর দাবি, ‘যাঁদের রেশন কার্ড থেকে আধার কার্ড, সচিত্র ভোটার পরিচয়পত্র রয়েছে, তাঁরা সবাই এদেশের নাগরিক। সেই অনুযায়ী মতুয়ারাও ভারতীয়’।