নতুন পালক যুক্ত হল রাজ্যের ভারী শিল্পকারখানা টিটাগড় ওয়াগন লিমিটেডের মুকুটে। নতুন জ্বালানিবাহী জাহাজ নির্মাণ করে ভারতীয় নৌবাহিনীর হাতে তুলে দিল টিটাগড় ওয়াগন। সময়ের আগেই নৌসেনার বরাত শেষ করার ক্ষেত্রে সংস্থার এই সাফল্য কর্মীদের কঠোর পরিশ্রমের কারণেই হয়েছে বলে জানান টিটাগড় ওয়াগনের এগজিকিউটিভ চেয়ারম্যান জগদীশ প্রসাদ চৌধুরী। রাজ্য সরকারেরও ভূয়সী প্রশংসা করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী নিজে উদ্যোগী হয়ে আমাদের এই শিল্প কারখানাকে চালাতে সাহায্য করছেন তাতে আমরা রাজ্য সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞ। যাতায়াতের সুবিধার্থে কারখানার সামনে বড় রাস্তা তৈরী করে দিয়েছেন।’
জাহাজ ব্যবসার সম্প্রসারণে যুদ্ধজাহাজ তৈরিকে পাখির চোখ করেছে টিটাগড় ওয়াগন লিমিটেড। ইতিমধ্যেই ভারতীয় নৌসেনার জন্য দুটি জ্বালানিবাহী বার্জ তৈরি করেছে সংস্থাটি। এছাড়াও হাতে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ওশান টেকনোলজির জন্য দুটি অত্যাধুনিক জলযান তৈরির বরাত তাদের হাতে রয়েছে। চলতি বছরের ১৭ মে টিটাগড়ে সংস্থার জাহাজ নির্মাণ কারখানা থেকে প্রথম জ্বালানিবাহী বার্জটি ভারতীয় নৌসেনার হাতে তুলে দেওয়ার পর মাত্র চার মাসের ব্যবধানেই এই দ্বিতীয় বার্জটিও তুলে দেওয়া হয়।
৭৫ মিটার লম্বা এই জাহাজটি নির্মাণ করতে খরচ হয়েছে প্রায় ৫০ কোটি টাকা। যা ১০০০ টন তেল পরিবহন করতে পারবে।নতুন এই জাহাজটি মুম্বাইয়ের সমুদ্রে ভাসমান যুদ্ধ জাহাজ ‘আই এন এস বিক্রমাদিত্য’ জাহাজের জন্য তেল পৌঁছে দেবে। কয়েকমাস আগে ভারতীয় নৌবাহিনীর পক্ষ থেকে উত্তর ২৪ পরগনার ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের টিটাগর ওয়াগন লিমিটেড কারখানার কর্তৃপক্ষকে এই জাহাজ নির্মানের বরাত দেয়। মাত্র তিন মাসের মধ্যেই নতুন এই এক হাজার টনের তেলবাহী জাহাজ নির্মাণ করে। শুক্রবার বিকেলে ভারতীয় নৌবাহিনীর হাতে তুলে দিলো রাজ্যের নতুন এই জাহাজ নির্মাণকারী শিল্পসংস্থা। শুক্রবার বিকেলে পরীক্ষামূলক ভাবে নতুন এই তেলবাহী জাহাজটি ব্যারাকপুরের গঙ্গায় নামানো হয়।
অনুষ্ঠানে ভারতীয় নৌসেনার অ্যাসিস্ট্যান্ট চিফ অফ মেটেরিয়াল রিয়ার অ্যাডমিরাল রাজরাম স্বামীনাথন বলেন, ‘শীঘ্রই ভারতীয় নৌসেনা ৭৭টি বার্জ সমেত বিভিন্ন জলযানের জন্য ১,৮০০ কোটি টাকার বরাত দিতে চলেছে। দেশের বেসরকারি জাহাজ প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলি এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে পারে।’ আপাতত কয়েকদিন পরীক্ষামূলক ভাবে গঙ্গায় চলার পর খুব শীঘ্রই এই তেলবাহী জাহাজটি মুম্বইয়ে সমুদ্রের উদ্দেশ্যে রওনা দেবে বলে জানা গেছে।