দাড়িভিটে দাঁড়িয়ে পুলিশ পেটানোর নিদান দিয়েছিলেন বিজেপি নেতা শঙ্কর চক্রবর্তী। প্রকাশ্যে এমন লোক খ্যাপানো হুমকি দেওয়ার পাঁচ ঘণ্টার মধ্যেই তাঁকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
তবে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ কার্যত সমর্থনই করেছেন শঙ্করকে। তাঁর মতে, ‘পরিস্থিতির বিচারে কেউ এমন কথা বলতেই পারেন। তৃণমূলের নেতারা বললে কিছু নয়, আমরা বললেই দোষ!’ দিলীপ জানিয়েছেন, শঙ্করকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ আগুনে ঘি ঢেলেছে। উত্তরে রাজ্যের পরিবহন মন্ত্রী শুভেন্দু আধিকারী বলেন, ‘যারা এই ধরণের কথা বলেন, তাঁরা শুধু রাজনীতির নয়, সমাজ জীবনেরও কলঙ্ক’। বিজেপি নেতার এমন মন্তব্যের নিন্দা করেছেন কংগ্রেস এবং সিপিএম নেতারাও।
ওয়াকিবহাল মহলের মতে, গোটা ঘটনা থেকে এটা স্পষ্ট যে, মৃতদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর চেয়ে পরিস্থিতি গরম করার দিকেই নজর বিজেপি নেতাদের। সোজা কথায়, ইসলামপুর থেকে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে চাইছেন তাঁরা। এজন্যই এমন উল্টোপাল্টা গা-জোয়ারি মন্তব্যের বন্যা।
ইসলামপুরের দাড়িভিটে নিহত দুই ছাত্রের বাড়িতে বিজেপি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে গিয়েছিলেন শঙ্কর চক্রবর্তী। সেখান থেকে বেরিয়ে প্রতিবাদ সভায় বলেন, ‘কুকুরকে জল দেবেন, কিন্তু পুলিশকে দেবেন না। পুলিশ কর্মী বা তাদের ছেলেমেয়েরা অসুস্থ হয়ে রাস্তায় পড়ে থাকলেও জল দেবেন না। পাশাপাশি জেলার পুলিশ সুপারকেও এলাকায় ‘টিকতে’ না দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন শঙ্কর। পুলিশকে ‘বয়কট’ করারও ডাক দেন তিনি। যা শোনা মাত্র এডিজি অনুজ শর্মা জানিয়ে দেন, শঙ্করবাবুর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তারপর ইসলামপুর থেকে ফেরার পথেই করণদিঘির বোতলবাড়ি এলাকায় গাড়ি থামিয়ে শঙ্করকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এদিকে শংকর চক্রবর্তীর গ্রেপ্তারি প্রসঙ্গে রাজ্য বিজেপিকে কটাক্ষ করে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন,‘বিজেপি ওপর থেকে নিচ পর্যন্ত এমনই সংস্কৃতি, তা এই বক্তব্যেই প্রমাণ হয়ে গিয়েছে। আমগাছে তো আর তেঁতুল হবে না।’