ইসলামপুরের স্কুল সঙ্ঘর্ষের ঘটনায় আরও একজনের মৃত্যু হল। মৃতের নাম তাপস বর্মন। ইসলামপুর কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র সে। গতকাল মৃত্যু হয় রাজেশ সরকার নামে এক প্রাক্তন ছাত্রের। ঘটনায় ২ ছাত্রের মৃত্যু হল। অন্যদিকে দুই ছাত্রের মৃত্যু ঘিরে উত্তাল হয়ে উঠেছে রাজ্য রাজনীতি। পুলিশের দাবি, এই ঘটনায় তারা কোনও গুলি চালায়নি। ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে বহিরাগতদের আক্রমণে। উত্তরদিনাজপুরের পুলিশ সুপার সুমিত কুমার জানান, ‘আমরা জেনেছি সেখানে বহিরাগতরা ঢুকে পড়েছিল। অস্ত্রশস্ত্রও জমা করা হয়েছিল। এমনকি একজন পুলিসকর্মীও গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। সেই বহিরাগতরা কারা, তা জানতে তদন্ত হচ্ছে’।
এসবের মধ্যে কয়েকটি ভিডিও ক্লিপিংস ঘিরে জল্পনা তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। তাতে দেখা যাচ্ছে, ইসলামপুরের দাড়িভিট হাইস্কুলে পুলিস-পড়ুয়া খণ্ডযুদ্ধের মাঝে ঢুকে পড়ে বেশ কয়েকজন বহিরাগত যুবক। তাদের মুখে গামছা জড়ানো। পরনে গেঞ্জী বা খালি গা। হাতে বাঁশ, লাঠি। ছোট ছোট ছাত্রছাত্রীদের বিক্ষোভ আন্দোলন, অবরোধ, পুলিসের সঙ্গে বচসা, ধস্তাধস্তির মাঝে ওই যুবকেরা ঢুকে পড়ে পুলিশকে বেধড়ক পেটাতে আরম্ভ করেছে। জেলা তৃণমূল নেতারা বলছেন, যে বহিরাগতরা বাঁশ, লাঠি নিয়ে পুলিশ পেটাচ্ছে তাদের দেখে প্রশিক্ষিত বলেই মনে হয়। প্রশ্ন উঠেছে, এঁদের কি কোনও রাজনৈতিক দল পাঠিয়েছিল?
এদিকে ইসলামপুর নিয়ে নবান্নে জরুরি বৈঠকে বসেন স্বরাষ্ট্র সচিব অত্রি ভট্টাচার্য, ডিজি বীরেন্দ্র। জেলা প্রশাসনের সঙ্গেও তাঁরা কথা বলেন। রাজ্য প্রশাসনের দাবি, পুলিস গুলি চালায়নি। দুটি গোষ্ঠীর দ্বন্দ্বেই এই দুই ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। এর পেছনে রাজনৈতিক মদত আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনার সিবিআই তদন্তের দাবি করেছেন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তাঁর কথায়, ‘যা হয়েছে, খুবই দুর্ভাগ্যজনক। ২ হাজার ছাত্র প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিল। কিন্তু যে পরিস্থিতি তৈরি হল, তা কাম্য ছিল না’।
স্থানীয়দের দাবি, দাড়িভিট স্কুলে গন্ডগোলে ক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছিল চাকরিতে যোগ দিতে আসা উর্দু শিক্ষক এবং পুলিশকে। কিন্তু গোটা স্কুলে চেয়ার–টেবিল ভাঙচুর করে স্কুলের গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র লন্ডভন্ড করা হয়েছে। জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে একজন শিক্ষকের বাইকও। এই কাণ্ড শুধুমাত্র ছাত্রদের নয়। এর পেছনে বহিরাগত লোকজন আছে।