হ্যাণ্ড গ্রেনেডের মতোই দেখতে অনেকটা। ছুঁড়তেও হয় ফিউজ বা পিন খুলেই। হ্যাণ্ড গ্রেনেডের মতোই শক্তিশালী। শুধু তৈরি হয় ‘নাইট্রোগ্লিসারিন’ দিয়ে। তাই স্থানীয় কারবারিরা একে ডাকে ‘বাংলা হ্যাণ্ড গ্রেনেড’ নামে। আমডাঙার গন্ডগোলে ব্যাপক ভাবে এই বাংলা হ্যাণ্ড গ্রেনেড ব্যবহার হয়েছিল। এই তথ্য জানতে পেরে পুলিশের চোখ ছানাবড়া।
পুলিশের অনুমান, আমডাঙার সাধারণ পেটো তৈরির কারবারিরা এমন বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে বোমা বানাতে পারবে না। তাই নিশ্চিত ভাবেই বাইরে থেকে দক্ষ ‘কারিগর’ আমদানি করা হয়েছে। কারণ, প্রচুর বোমা ফেটেছে। এত বোমা বাইরে থেকে নিয়ে আসা অসম্ভব। প্রশ্ন, তাহলে কি আমডাঙার বোমা তৈরির কারখানার নেপথ্যে আরও বড় মাথা রয়েছে? পুলিশ এখন সেই মাথাদের খোঁজে তল্লাশী চালাচ্ছে। কারণ, মাথাকে খুঁজে না পেলে এই ধরণের বোমা তৈরির ফরমুলা সারা বাংলায় ছড়িয়ে পড়তে পারে। যা রাজ্যের নিরাপত্তার পক্ষে বিপজ্জনক।
প্রসঙ্গত, গত ২৮ সেপ্টেম্বর আমডাঙার বইগাছি গ্রামে ৩ ঘণ্টা ধরে মুড়ি-মুড়কির মতো গুলি বোমা পড়েছে। যার মধ্যে আছে পেটো, ‘কালো মশলা’-র সুতলি বোমা এবং ‘লাল মশলা’র কৌটো বোমা। কিন্তু সবথেকে বেশী ব্যবহার হয়েছে ‘বাংলা হ্যাণ্ড গ্রেনেড’। এই গ্রেনেড পুলিশের নজর আসতেই তাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ।
এক পুলিশ অফিসার জানান, সেনাবাহিনীতে যে হ্যাণ্ড গ্রেনেড ব্যবহার হয়, তা শক্ত সিন্থেটিক কভারে মোড়া থাকে। পিন বা ফিউজ খুলে ছোঁড়ার পর ফাটতে ৫ থেকে ৬ সেকেণ্ড সময় লাগে। ওই সমইয়ের মধ্যে যে ছোঁড়ে সে নিরাপদ দূরত্বে সরে যেতে পারে। ‘বাংলা হ্যাণ্ড গ্রেনেড’ প্লাস্টিকের ওপর দড়ি জড়িয়ে বাঁধা। বাদবাকি সব এক। পিন বা ফিউজ খুলে ছুঁড়তে হয়। ফাটতেও ৫ থেকে ৬ সেকেণ্ড সময় লাগে। এমনকি এই বোমার ক্ষমতাও হ্যান্ড গ্রেনেডের মতোই শক্তিশালী এবং মারাত্মক। এই তথ্যই পুলিশের কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে।
পুলিশের দাবি, এই ধরণের বোমা তৈরির কারিগর আমডাঙায় নেই। তাই কোথা থেকে এই বোমা তৈরির কারিগর এল তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। পাশাপাশি সীমান্ত টপকে বাংলাদেশের দক্ষ কারিগর এসে এই বোমা তৈরি করে গিয়েছে কিনা তাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।