আমডাঙা-কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত জাকির ভল্লুক তাঁদের গর্ব। বলেছিলেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী। এবার আদালতে পেশ করার সময় ভল্লুককে পুলিশের হাত থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করল সেই নেতার অনুগামীরা। সব মিলিয়ে ব্যপক উত্তেজনা ছড়াল বারাসত আদালত চত্বরে।
সকাল থেকেই জাকির ভল্লুকের মুক্তির দাবিতে আদালত চত্বরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন বাম সমর্থকেরা। পুলিশ অভিযুক্ত জাকিরকে নিয়ে বারাসত আদালতে এলে সিপিএমের আইনজীবী এবং সমর্থকেরা ঝাঁপিয়ে পড়েন। পুলিশের হাত থেকে অভিযুক্তকে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টাও হয়। অবস্থা সামাল দিতে আসে র্যাফ। তারা জাকির অনুগামীদের সরিয়ে দেয়। উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই আদালতে পেশ করা হয় জাকিরকে। ধৃতকে ৫ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
আমডাঙায় বোর্ড গঠনকে কেন্দ্র করে যে সন্ত্রাস ছড়িয়েছিল, তাতে অস্ত্র ও বোমা জোগান দিয়ে কারা মদত করেছিল, তা জানতে জাকিরকে জেরা করা হবে। আমডাঙায় গণ্ডগোলের দিন থেকে এখনও পর্যন্ত তিন হাজার বোমা উদ্ধার হয়েছে। পুলিশের দাবি, জাকিরকে জেরা করে আরও বোমা এবং বন্দুক উদ্ধার হতে পারে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার পর বর্তির বিল পেরিয়ে কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে ধরে সোজা চলে যায় মুম্বই। সেখান থেকে রাজস্থান। উত্তর ২৪ পরগণার সিনিয়র পুলিশ সুপার সি সুধাকর বলেন, ‘রাজস্থান থেকে আমরা ওকে গ্রেপ্তার করেছি। জাকিরকে জেরা করে আরও বন্দুক, বোমার হদিশ মিলতে পারে। এখনও পর্যন্ত আমডাঙা কাণ্ডে জাকির-সহ মোট ৪২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। উপদ্রুত এলাকা থেকে তিন হাজার বোমা, ৭৮ টি গুলি এবং সাতটি অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে’। পুলিশ জাকিরের বিরুদ্ধে খুন, ষড়যন্ত্র, ঘরে ঢুকে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে মারধর, খুনের চেষ্টা-সহ অস্ত্র আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে।
অবশ্য অভিযুক্ত জাকির ভল্লুককে পুলিশ যে অভিযগেই গ্রেপ্তার করুক না কেন দল তার পাশেই দাঁড়াচ্ছে। বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু জাকিরকে ক্লিনচিট দিয়ে দাবি করেন, ‘জাকির এলাকার গরিব, খেটে-খাওয়া মানুষ। বন্ধু-বান্ধবেরা তাকে বাইরে যাওয়ার পরামর্শ দেয়। দলের সঙ্গে কোনও আলোচনা করেনি। তাহলে তাকে বাইরে যেতে নিষেধ করা হত’।