ক্ষোভ জমছিল। দলের অন্দরেও নানা কথা হচ্ছিল। এবার স্মরণসভার মঞ্চেই ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটল। মঞ্চ থেকেই বাম নেতারা আফসোস করলেন, প্রশ্ন তুললেন, বাংলার সিপিএম কেন সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের স্মরণসভার আয়োজন করতে পারল না? বেআব্রু হয়ে গেল আলিমুদ্দিন আর গোপালন ভবনের অর্ন্তদ্বন্দ্ব।
সিপিএমের দুই বর্ষীয়ান নেতা কান্তি গঙ্গোপাধ্যায় এবং তড়িৎ তোপদার এদিন প্রকাশ্যে আলিমুদ্দিনের সোমনাথ- স্মরণ নিয়ে দোলাচলে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। একাধিক সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজিত সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের স্মরণসভায় সিপিএমের নাম না করে ক্ষোভ উগড়ে দেন কান্তি। বলেন, ‘অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে বাধ্য হচ্ছি, যেভাবে সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের স্মরণসভা হওয়ার কথা ছিল তা হয়নি। অনেক সংগঠন নিজস্ব উদ্যোগে স্মরণসভা করেছেন। কিন্তু তাঁকে যেভাবে স্মরণ করা উচিৎ ছিল, তা হয়নি’।
উপস্থিত জনতার বুঝতে অসুবিধা হয়নি, কান্তি কাদের দিকে আঙুল তুলেছেন। তড়িৎ তোপদারও কান্তির সুরে সুর মিলিয়ে বলেন, ‘কান্তি গঙ্গোপাধ্যায় ঠিক বলেছেন। সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের স্মরণসভা যে মাত্রায় হওয়া উচিৎ ছিল, তা হয়নি’।
সিপিএমের বরিষ্ঠ নেতা গৌতম দেবও বলেন, ‘প্রবল মনোবেদনা না থাকলে কেউ শান্তিনিকেতনে চলে যায়? সোমনাথদা কলকাতায় আসতে চাইতেন না। আমাদের শান্তিনিকেতনে ডাকতেন’।
বহিষ্কৃত সিপিএম নেতা সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যুর পর থেকেই তাঁর স্মরণসভার আয়োজন নিয়ে দোলাচলে ছিল সিপিএম। সোমনাথবাবুর মৃত্যুর পরেই একেজি ভবন থেকে বিবৃতি পাঠের বহর দেখেই এমন সন্দেহ দানা বেঁধেছিল রাজ্যবাসীর মনে। সেই বিবৃতিতে সোমনাথবাবুকে দশ বারের সাংসদ বলা হলেও উল্লেখ করা হয়নি তাঁর দলের নাম। সেই সময়েই রাজ্যবাসীর একাংশ প্রশ্ন তুলেছিলেন, কিসের সংশয় সিপিএমের? রাজ্যের নেতারাই বা কেন সোমনাথবাবুর স্মরণসভার আয়োজনের কথা খোলাখুলি জানাতে পারছে না দিল্লীকে? তখনই বোঝা গিয়েছিল, দিল্লীর কারাতদের কাছে বাংলার আলিমুদ্দিন ঠুঁটো জগন্নাথ। এখনও পর্যন্ত আলিমুদ্দিনের সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের স্মরণসভার আয়োজন করতে না পারা সেটাই আরও একবার প্রমাণ করল।