পিএনবি-কাণ্ডে অন্যতম দোষী মেহুল চোকসিকে দেশে ফিরিয়ে আনতে সমস্যা হবে। এমনই আশঙ্কা কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই- এর। সিবিআই জানতে পেরেছে, আগে থেকে নিখুঁত পরিকল্পনা করেই দেশ ছেড়েছেন মেহুল। তবুও এদেশের সবচেয়ে বড় ব্যাঙ্ক জালিয়াতি-কান্ডে অভিযুক্ত এই পলাতক ব্যবসায়ীকে দেশে ফেরাতে বদ্ধপরিকর সিবিআই। পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের ২০০ কোটি ডলার তছরুপের অভিযোগ রয়েছে তাঁর উপর। গত বছরেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের অ্যান্টিগুয়া ও বার্বুডার নাগরিকত্ব নিয়েছেন মেহুল। এ বছরের ১৫ জানুয়ারি মেহুল ওই রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্যের শপথ নেন।
মেহুলের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে ‘রেড কর্নার নোটিশ’-এর আবেদন করার পাশাপাশি তাকে দেশে ফেরানোর জন্যেও সচেষ্ট হয়েছে সিবিআই। এছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া অভিযোগকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত’ বলে যে দাবি মেহুল করেছেন, তাও কড়া ভাষায় খণ্ডন করেছে সিবিআই। উল্লেখ্য, সিবিআই মেহুলের বিরুদ্ধে রেড কর্নার নোটিশের আবেদন করলেও মেহুলের অভিযোগের কারণে ইন্টারপোল এখনও পর্যন্ত তা অনুমোদন করেনি। ইন্টারপোলের কাছে মেহুল চোকসি অভিযোগ করেন যে তার বিরুদ্ধে যাবতীয় মামলা আসলে ‘রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র’। পাশাপাশি, ভারতের জেলগুলির স্বাস্থ্য নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। এমন জেলে রাখা হলে তাঁর সাস্থ্যের ক্ষতি হতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন মেহুল। এরপরই কড়া ভাষায় এর জবাব দেয় সিবিআই। ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাটি জানিয়ে দেয়, মেহুলের দাবি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। বরং জাল নথির মাধ্যমে পাঞ্জাব ন্যাশানাল ব্যাঙ্কের থেকে ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি টাকা লোপাটের সম্ভাব্য মূলচক্রীই সে। আপাতত চোকসির বিরুদ্ধে ‘রেড কর্নার’ নোটিশ জারি করার সিদ্ধান্তটি ৫ সদস্যের ‘কমিশন ফর কন্ট্রোল অফ ফাইলস’-এর বিবেচনাধীন। আগামী মাসে উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে এ বিষয়ে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে তারা।
প্রশ্ন উঠতেই পারে, নীরব-মেহুলের পলায়ন কোথায় আলাদা?
‘ভাগ্নে’ নীরব মোদী বর্তমানে ইংল্যাণ্ডে। চলতি বছর ১ জানুয়ারিতে সে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। তার বর্তমান অবস্থান চিহ্নিত হওয়ার পরই তার বিরুদ্ধে ‘রেড কর্নার’ নোটিশ জারি করা হয়েছে। কিন্তু অন্যদিকে, ‘মামা’ মেহুল আগাম ভাবনা চিন্তা করেই পালানোর ছক কষেছেন। যেহেতু, এই মুহূর্তে মেহুল চোকসি অ্যান্টিগুয়া ও বার্বুডার নাগরিক এবং সে দেশের আইনের আওতায়, তাই তাঁর বিরুদ্ধে ‘রেড কর্নার’ নোটিশ জারি করা কঠিন। এদিকে অ্যান্টিগুয়াও তাদের নাগরিক, চোকসিকে ভারতের হাতে প্রত্যর্পণের ব্যাপারে তেমন আগ্রহ দেখায়নি। ফলে, তাঁর বিরুদ্ধে শুধুমাত্র ইন্টারপোলের ‘রেড কর্নার নোটিস’ জারি করলেই যে তাঁকে দেশে ফেরানো যাবে, সে বিষয়ে নিশ্চিত নন খোদ সিবিআই আধিকারিকেরা।