নাম না করেই বিজেপি-কে একহাত নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি ধর্ম, ভাষা, জাতি নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ থাকার বার্তা দিলেন জনতাকে। বললেন, ‘হিন্দুস্থানের মাটি পবিত্র। এই দেশকে কোনও অবস্থাতেই ভাঙতে দেব না’।
রাজ্যের হিন্দিভাষীদের মধ্যেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। তাই রাষ্ট্রীয় বিহারি সমাজের আমন্ত্রণে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে সংবর্ধনা জানানো হয় মুখ্যমন্ত্রীকে। রীতিমাফিক পরিয়ে দেওয়া হয় গামছা। করতালিতে ফেটে পড়েন হাজার-হাজার মানুষ। সেই রেশ বজায় রেখেই মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন, ‘সময় এলে হিন্দী বিশ্ববিদ্যালও তৈরি করা হবে’। সংগঠনের কর্তাদের আর্জি মেনেই তৃণমূলের হিন্দী সেল তৈরির কথা ঘোষণা করেন মমতা। এই সেলের সভাপতি অর্জুন সিং ও সাধারণ সম্পাদক করা হয় রাজেশ সিনহাকে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সুব্রত বক্সি, রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, সাধন পাণ্ডে, শশী পাঁজা, মলয় ঘটক, তৃণমূল বিধায়ক বৈশাখী ডালমিয়া প্রমুখ।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘রাত যত খারাপ হবে, সকাল ততটাই ভালো হবে’। বিজেপির ভেদাভেদের রাজনীতির সমালোচনা করে বলেন, ‘ ভোট কাছে এলে কেউ কেউ বাঙালি, বিহারি প্রভৃতি বলে ভেদাভেদ সৃষ্টি করার চেষ্টা করে। কিন্তু আমাদের কাছে সবাই সমান। কোনও ভেদাভেদ নেই। বাংলা, বিহার, অসম সবই হিন্দুস্থানের এক-একটা টুকরো। আমাদের ঐতিহ্য জোড়ায়, ভেঙে ফেলা নয়’।
রাজ্যে ভোটারদের মধ্যে হিন্দিভাষী বিশেষ করে বিহারের আদি বাসিন্দাদের সংখ্যা যথেষ্ট। কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ভোটের জয়-পরাজয় নিয়ন্ত্রণ করেন তাঁরাই। বিহারের বাসিন্দাদের প্রতি একাত্মতা জানাতে গিয়ে সেখানকার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা আরজেডি সুপ্রিমো লালুপ্রসাদ যাদবের সঙ্গে তাঁর ভালো সম্পর্ক থাকার উল্লেখ করেন মমতা। অসমে বিজেপি এনআরসি বা নাগরিকপঞ্জি তৈরির ফলে বাঙালিদের পাশাপাশি বিহারের বাসিন্দারা সঙ্কটে পড়েছেন বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, ‘বিহারের আদি বাসিন্দা এমন দুই লক্ষ মানুষের নাম এনআরসি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। বাঙালি, অবাঙালি, হিন্দু, মুসলিমের নাম এনআরসি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।বাংলায় এরকম কিছু কোনও দিন হয়নি, হবেও না। বাংলা সবার। এখানে কোনও ভেদাভেদ নেই। সবাইকে এক চোখে দেখা হয়’।
বক্তব্যের শেষে মমতা স্লোগান দেন, বিহারি-বাঙালি ঐক্য জিন্দাবাদ। সংগঠনের কর্তারা জানান, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসাবে দেখছেন তাঁরা। তাঁর নেতৃত্বেই হিন্দীকে ‘রাষ্ট্রীয় ভাষা’ ঘোষণার দাবি পূরণ হবে বলে আশা তাঁদের।