বিজেপির সাম্প্রদায়িক মনোভাবের কড়া সমালোচনা না করে আলিমুদ্দিনের নেতারা জলস্পর্শ করেন না।অথচ তাঁদের কর্মীরাই কি না বঙ্গোপসাগরে ভাসিয়ে দিল দলের দলিলকে!তৃণমূলকে ঠেকাতে রাজ্য নেতৃত্বের সাবধানবানীর তোয়াক্কা না করে রাম-বাম জোট দখল করছে একের পর এক গ্রাম পঞ্চায়েত।তমলুক, রামনগর, করিমপুর, তেহট্ট, উত্তরবঙ্গের গোয়ালপোখরের পর এবার বাগদা, গাইঘাটা, ঝাড়গ্রামের মানিকপাড়া, বাসন্তী উত্তরের মোকামবেড়িয়া এবং জলপাইগুড়ির বিন্নাগুড়িতে ক্ষমতা দখল করল বাম–রামের জোট।
বাগদার কনিয়াড়া ২ নম্বর পঞ্চায়েতে সিপিএম এবং কংগ্রেসের সমর্থনে বোর্ড গড়ছে বিজেপি। অন্যদিকে, গাইঘাটা ব্লকের ধর্মপুর ২ নম্বর পঞ্চায়েতে বিজেপিকে সমর্থন জানিয়ে বোর্ড গড়তে সহযোগিতা করেছেন সিপিএম সমর্থিত এক নির্দল সদস্য। কনিয়াড়া ২ নম্বর পঞ্চায়েতের আসন সংখ্যা ১৫। নির্বাচনে তৃণমূল ৪টি, বিজেপি ৯টি, কংগ্রেস ও সিপিএম ১টি করে আসন পায়। ধর্মপুর ২ নম্বর পঞ্চায়েতের ১৬টি আসন। তৃণমূল ৬টি, বিজেপি ৮টি আসন পায়। ২টি আসন পায় নির্দলরা। এদিন বোর্ড গঠনের সময় সিপিএম সমর্থিত এক নির্দল প্রার্থী বিজেপিকে সমর্থন জানান। বদলে ‘পুরস্কার’ হিসেবে তাঁকে উপপ্রধান করা হয়।
অন্যদিকে, ঝাড়গ্রামের মানিকপাড়া পঞ্চায়েতের আসনসংখ্যা ১৫। তৃণমূল এবং বিজেপি ৭টি করে আসন পায়। একটি আসনে জয়ী হন মানিকপাড়া সিপিএম লোকাল কমিটির সম্পাদক তথা জেলা কমিটির সদস্য। তিনি ভোটাভুটিতে বিজেপিকে সমর্থন করেন। তিনি ভোটের পর উপপ্রধান হন। বিজেপি–র ঝাড়গ্রাম জেলা সাধারণ সম্পাদক অবনী ঘোষ বলেন, ‘মানিকপাড়ায় সিপিএম সমর্থন দেওয়ায় আমাদের দলের গ্রাম পঞ্চায়েত বোর্ড গঠন হয়েছে। প্রধান হয়েছেন বিজেপি থেকে এবং উপপ্রধান হয়েছে সিপিএমের।’ সিপিএমের ঝাড়গ্রাম জেলা সম্পাদক পুলিনবিহারী বাস্কে বলেন, ‘আমাদের দলের বক্তব্য ছিল বিজেপি এবং তৃণমূলের থেকে সমদূরত্ব বজায় রাখব। এক্ষেত্রে কী হয়েছে খোঁজ নিয়ে দেখব।’
প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময়েই একাধিক জেলায় বিজেপি-সিপিএমের জোটের খবর প্রকাশ্যে এসেছিল। এই নিয়ে তোলপাড় হয়েছিল সিপিএম রাজ্য কমিটির সভাও। জেলায় জেলায় রিপোর্টও তলব করেছিল আলিমুদ্দিন। কিন্তু কোনও জেলাই সেই রিপোর্ট পাঠায়নি বলে সিপিএম সূত্রের খবর। এ বার বোর্ড গঠনেও সামনে এল বাম-রাম জোটের ছবি। পরিস্থিতি যেদিকে এগোচ্ছে তাতে এমন ঘটনা রাজ্যে আরও ঘটবে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।