জল্পনা চলছিলই। নিশ্চিত করলেন ঋষি কপূর। বিক্রি হয়ে যাচ্ছে রাজ কপূরের স্বপ্নের আর কে স্টুডিও। গত সেপ্টেম্বরেই বিধ্বংসী আগুনে ব্যপক ক্ষতি হয়েছে স্টুডিওর। একতলাটা একেবারেই পুড়ে গিয়েছে। সেটা আর মেরামত হয়নি। নতুন করে সাজানোরও মূলধন নেই। তাই চার দশকের পুরনো এই স্টুডিও বিক্রি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কাপূর পরিবার।
এই ব্যাপারে ঋষি কাপূর বলেন, ‘আবেগ তো মিশে আছেই। কিন্তু কী করা যাবে? স্টুডিয়োর ব্যয়ভার বহন করা প্রায় হাতি পোষারই সমান হয়ে যাচ্ছিল।’
আর কে ফিল্মসের প্রযোজনায় তৈরি হয়েছিল বরসাত (১৯৪৯), আওয়ারা (১৯৫১), বুট পোলিশ (১৯৫৪), শ্রী ৪২০ (১৯৫৫), জাগতে রহো’র (১৯৫৬) মতো সুপারহিট ছবিগুলি। এছাড়া জিস দেশ মে গঙ্গা বেহতি হ্যায় (১৯৬০), মেরা নাম জোকার (১৯৭০), ববি (১৯৭৩), সত্যম শিবম সুন্দরম, রাজ কাপুরের শেষ ছবি রাম তেরি গঙ্গা ময়লি-র মতো একগুচ্ছ ব্লকবাস্টার সিনেমার শুটিং হয়েছিল এই স্টুডিওতেই। তাই এই জায়গার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে কাপুর পরিবারের নানা স্মৃতি। তাহলে কেন এমন সিদ্ধান্ত?
গত বছর রিয়্যালিটি শো ‘সুপার ডান্সার’-এর শুটিংয়ের সময়ে আগুন লাগে আর কে স্টুডিয়োতে। বেশ কিছু অমূল্য সম্পদ পুড়ে ছাই হয়ে যায়। নষ্ট হয়ে যায় আরকে স্টুডিও।ভস্মীভূত হয় যে অভিনেত্রীরা অভিনয় করেছিলেন তাঁদের পোশাক। নার্গিস, বৈজন্তীমালা থেকে শুরু করে ঐশ্বর্যা রাইদের সেই সব পোশাকের সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের গয়নাগাটিও পুড়ে ছাই হয়ে যায়। নষ্ট হয়ে যায় ‘মেরা নাম জোকার’-এর সেই মুখোশ, ‘জিস দেশ মে গঙ্গা বহতি হ্যয়’-এর সেই বন্দুক। ‘আওয়ারা’, ‘সঙ্গম’, ‘ববি’ এই সব ছবিতে ব্যবহৃত সেই বিরাট পিয়ানো প্রায় শেষ হয়ে যায়।
অগ্নিকাণ্ডের আগে থেকেই লোকসানের মুখ দেখতে শুরু করেছিল এই স্টুডিও। অনেকটা লাখ টাকার হাতি পোষার মতোই পরিস্থিতি হয়ে দাঁড়িয়েছিল। খুব কম সংখ্যক ছবি, টিভি সিরিয়াল এবং বিজ্ঞাপনের কাজই এখানে হত। বিশেষ ভাড়াও মিলত না। সেই সঙ্গে যাঁরা বুক করতেন তাঁরা আবার বিনামূল্যে পার্কিংয়ের ব্যবস্থা, বিশেষ ছাড়ের দাবিও জানাতেন। সব মিলিয়ে ব্যবসায় মন্দা যাচ্ছিল। তাই শেষমেশ বিক্রির সিদ্ধান্তই নিল কাপুর পরিবার।
তবে কবে বিক্রি হচ্ছে আর কে স্টুডিয়ো সে বিষয়টা খোলসা করেননি ঋষি কপূর। হতে পারে দু’দিন, দু’মাস। হয়তো বা দু’বছরও লেগে যেতে পারে এই স্টুডিও বিক্রি হতে, জানিয়েছেন ঋষি।