নবান্নে মন্ত্রী-আমলাদের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর প্রবল তিরস্কারের মুখে পড়ল রাজ্যের শিক্ষা দপ্তর। কলেজে কলেজে তোলাবাজি থেকে দপ্তরের কাজ নিয়ে একের পর এক অভিযোগ।গোটা ঘটনায় প্রবল ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষা দপ্তর বাস্তুঘুঘুর বাসা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমার কাছে খবর আছে মন্ত্রীর কথা মানা হচ্ছে না।’ এই বিষয়ে শিক্ষা দপ্তরের বিশেষ সচিব অরুণ সেনগুপ্ত কিছু বলতে উঠলে মুখ্যমন্ত্রী তাকে থামিয়ে দিয়ে বলেন, ‘আপনি থামুন, মন্ত্রী যা বলছেন সেটা শুনুন।’ মুখ্যসচিব মলয় দে-কে শিক্ষা দপ্তরের আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠকে বসার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী জানতে চান, কেন শিক্ষকরা ঠিকমতো ক্লাস নিচ্ছেন না৷ স্কুল পরিদর্শদরের ভূমিকা নিয়েও ক্ষুব্ধ হয়েছেন মমতা৷ এই বিষয়গুলি গুরুত্বের সঙ্গে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি৷ শিক্ষক নিয়োগ থেকে কলেজে ভর্তি প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনতে আগেই জোর দিয়েছিলেন মমতা। বৈঠকে এইসব বিষয়েও জোর দেন মুখ্যমন্ত্রী।
শিক্ষাক্ষেত্র নিয়ে কার্যত জেরবার মুখ্যমন্ত্রী৷ টাকা নিয়ে ছাত্র ভর্তি-সহ একাধিক দুর্নীতিতে অভিযুক্ত রাজ্যের শিক্ষাক্ষেত্র। এসবের কারণে রাজনৈতিক ময়দানে শাসক দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে যথেষ্ট৷ শিক্ষামন্ত্রীর একাধিক নির্দেশেও থামানো যায়নি ছাত্র নেতাদের৷ দুর্নীতিতে জড়িয়েছে ছাত্র নেতারা৷ দুর্নীতি প্রকাশ্যে আসায় সরিয়ে দেওয়া হয়েছে টিএমসিপির সভানেত্রীকেও৷ শেষ পর্যন্ত হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীকে৷
বর্ষায় বিভিন্ন জেলার রাস্তার হাল খারাপ। তা নিয়েও অসন্তোষ চেপে রাখেননি মুখ্যমন্ত্রী। নির্দেশ দিয়েছেন, দ্রুত মানুষের দূর্ভোগ কাটাতে হবে। ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তর নিয়েও সরব হন মুখ্যমন্ত্রী৷ দপ্তরের প্রধান সচিব মনোজ পন্থকে উদ্দেশ্য করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দপ্তরের বেশ কয়েকজন বিএলআরও বদমায়েশি করছে৷ সেটা আপনি গুরুত্বের সঙ্গে দেখুন৷’রাইস মিলের দুর্নীতি নিয়ে ডিজিকে কড়া পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিয়েছেন মমতা।
সুপ্রিম কোর্টে প্রায় এক তৃতীয়াংশ পঞ্চায়েত আসনের ভবিষ্যৎ ঝুলে রয়েছে। অনেক জায়গাতেই পঞ্চায়েত বোর্ড গঠন করা যায়নি। সেখানে যাতে উন্নয়নের সমস্যা না হয় তা দেখতে পাঁচ মন্ত্রীকে নিয়ে একটি কমিটি গড়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠকে তিনি জানিয়ে দেন, ‘পঞ্চায়েতের কাজকর্ম দেখা ছাড়াও সমন্বয় সাধন করবেন এরা’।