যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের প্রবেশিকা পরীক্ষার মেধাতালিকা নিয়ে তৈরি হয়েছে ঘোর বিতর্ক। উত্তরপত্রের পুনর্মূল্যায়ন নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। নতুন মেধা তালিকায় নম্বর বেড়েছে ২৬০ জন পড়ুয়ার। আগের মেধাতালিকা থেকে ১৫ পরীক্ষার্থীর নাম বাদ গিয়েছে। নতুন করে যোগ হয়েছে ১৫ জনের নাম। প্রথমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের মূল্যায়নে প্রশ্ন ওঠায় দ্বিতীয়বার অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের মূল্যায়ন করানো হয়। প্রশ্ন, তাতেই এতটা পার্থক্য হয় কী করে?
এখানেই শেষ নয়। উচ্চমাধ্যমিক বা সমতুল পরীক্ষায় ভালো নম্বর পেয়েও ইতিহাসের প্রবেশিকা পরীক্ষায় শূন্য পেয়েছেন অনেক ছাত্রই। অথচ, প্রশ্নপত্রে এমসিকিউ ধরনের কোনও প্রশ্ন ছি না। সবই ছিল বিষয় ভিত্তিক প্রশ্ন। প্রশ্ন, তাহলে ছাত্র-ছাত্রীয়া শূন্য পেল কী করে?
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, রাজনৈতিক মতাদর্শে চালিত হয়ে উত্তরপত্র দেখেছেন তাঁরা। একটি প্রশ্ন ছিল, ‘একজন মহিলা রাজনীতিকের কথা বল যিনি তোমাকে উৎসাহ দেন’। অভিযোগ, এক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কয়েকজন মহিলা রাজনীতিকের নাম লেখা হলে আশানুরূপ নম্বর মেলেনি। নতুন পরীক্ষকেরা না-কি এক্ষেত্রে মুক্তমনে নম্বর দিয়েছেন। উত্তরপত্রগুলি মতাদর্শগতভাবে বিচার না করে ইতিহাসের পাঠক্রম হিসাবেই দেখেছেন নতুন অধ্যাপকেরা।
একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইতিহাসের প্রবেশিকা পরীক্ষার ফলাফল এবং রিভিউ পদ্ধতি নিয়ে জনমানসে যেভাবে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে তার পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিরপেক্ষ তদন্ত করবে।
প্রবেশিকা নিয়ে দূর্নীতি সামনে আসতেই উপাচার্য সুরঞ্জন দাসের থেকে গোটা বিষয়ের রিপোর্ট তলব করেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। নড়েচড়ে বসে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। জানা গেছে, প্রথমে প্রবেশিকার দায়িত্বে থাকা রেজিস্ট্রার চিরঞ্জীব ভট্টাচার্যের থেকে ইমেলে রিপোর্ট তলব করেন উপাচার্য। তারপরেই ইতিহাসের অধ্যাপক তথা জুটার সক্রিয় সদস্য মেরুনা মুর্মু, সম্প্রীতা মিত্র এবং সুদেষ্ণা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকে বসেন উপাচার্য। তাপরই ইতিহাসের প্রবেশিকা পরীক্ষায় দূর্নীতির কুশীলবদের ধরতে তদন্ত করার সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।