চোখধাঁধানো উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে শুরু হল জাকার্তা-পালেমবাং এশিয়ান গেমস। ইন্দোনেশিয়ায় ১৮তম এশিয়ান গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটা হল জমকালো ও ঐতিহাসিক। চিরশত্রু দুই প্রতিবেশী দেশ-উত্তর কোরিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া যাবতীয় দূরত্ব ঘুচিয়ে একসঙ্গে একই পতাকার তলায় হাঁটল। যা সব দিক থেকে ঐতিহাসিক। দুটো দেশের মধ্যে সম্পর্ক তলানীতে ছিল। শেষ অবধি খেলার মাঠ ঘুচিয়ে দিলে দুই কোরিয়ার দূরত্ব। শীতকালীন অলিম্পিক্স থেকে দুই কোরিয়ার মিলনের যে প্রক্রিয়াটা শুরু হয়েছিল, সেটা যেন আজ পূর্ণ হল। দুই কোরিয়া একসঙ্গে মিলে অংশ নিচ্ছে মহিলাদের বাস্কেটবল, কেনোয়িং ও রোয়িংয়ে। ৪৫টি দেশের ১৭হাজার অ্যাথলিট এবারের এশিয়ান গেমসে অংশ নিচ্ছেন। জাকার্তার গেলোরা বুং কার্নো স্টেডিয়ামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মার্চপাস্টে ভারতের জাতীয় পতাকা হাতে হাঁটলেন জ্যাভলিন থ্রোয়ার নীরজ চোপড়া। পিভি সিন্ধু থেকে সাইনা নেহওয়াল। ভারতীয় হকি দল থেকে কবাডি দল। এবার ভারতের ৫৭০জন অ্যাথলিটের দল বেশ শক্তিশালী। ভারতের লক্ষ্য এবার পদক তালিকায় প্রথম পাঁচে শেষ করা।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের জন্য ইন্দোনেশিয়া খরচ করল ৩৫ মিলিয়ন ডলার। ইন্দোনেশিয়ার ঐতিহ্যবাহী দ্বীপ, ফুল আর পাহাড়ের প্রতীকী চিত্র দিয়ে মায়াময় এক পরিবেশ তৈরি করা হল। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পারফরমাররা ফুটিয়ে তুললেন ইন্দোনেশিয়ার ইতিহাস, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য। দ্বীপ, পাহাড়, সমুদ্র, আদিবাসীদের জীবন, সংস্কৃতি—সব এমনভাবে উঠে এলে যেন মনে হচ্ছে পুরো দেশের ইতিহাস-ভুগোলটা মাঠে ধরা দিল। ইন্দোনেশিয়ার বিখ্যাত গায়িকা আনগুন, রাইসা, তুলুস, কনডোলোগিটরা। সঙ্গীত পরিচালক আডি এমএস ও রোনাল্ড ইউনার্ডি মঞ্চ মাতালেন।
জাকার্তা-পেলামবাং এশিয়াডে সন্ত্রাসবাদী হামলার পাশপাশি দূষণ নিয়েও ভয় থাকছে। জাকার্তার বায়ুদূষণ ভয়াবহ। প্রতি কিউবিক মিটারে এর মাত্রা ১৫৪ মাইক্রোগ্রাম। যা অ্যাথলিটদের অসুস্থ করিয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। তবে এখন এসব শঙ্কা ভুলে স্মরণীয় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বুঁদ সবাই।