দীর্ঘ ১ মাস হাসাপাতালে থাকবার পর গতকাল বিকেল ৫টা বেজে ৫ মিনিটে সকল ভারতবাসীকে ছেড়ে এক অজানা দেশে পাড়ি দিয়েছেন ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী। উল্লখ্যে, তিনি ছিলেন ভারতীয় রাজনীতিতে এমন একজন প্রধানমন্ত্রী যিনি কংগ্রেস ছাড়া ৫ বছর প্রধানমন্ত্রিত্ব পদে ছিলেন। বলাবাহুল্য তিনি ছিলেন একজন দক্ষ রাজনীতিবিদ,মনপ্রান দিয়ে ভালোবাসতেন রাজনীতিকে, যা বিভিন্ন বিরোধী দলেরা নির্দ্বিধায় স্বীকার করে। কিন্তু রাজনীতি ছাড়া তিনি আর কি কি ভালবাসতেন জানেন? সেটা হল খাওয়া দাওয়া করতে!এমনকি তাঁর পছন্দের জন্যই সরকারের তরফে কোনও খাওয়াদাওয়ার আয়োজন করা হলে গোলাপ জাম সেখানে অবশ্যই খাদ্যতালিকায় রাখা হত।
এবার তাহলে চলুন বিস্তারিত আলোচনা করে নেওয়া যাক, অর্থাৎ গতকাল রাতে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর মৃত্যুর পর তাঁর ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি এবং সাংবাদিকরা তাঁর খাদ্যপ্রেম বিশেষত মিষ্টি এবং সিফুড প্রেম- চিংড়ির প্রতি ভালবাসা ইত্যাদি প্রসঙ্গে নানা কথা বলেন।
সেখানে বিখ্যাত সাংবাদিক রাশিদ কিদওয়াই জানান, কড়া ডায়েটের মধ্যে থাকাকালীনও কীভাবে তিনি অফিসিয়াল লাঞ্চে মিষ্টি খেতেন। তাঁর স্বাস্থ্যের কথা ভেবে সতীর্থরা একটা পরিকল্পনা করেন। তাঁরা মাধুরী দিক্সিতের সঙ্গে বাজপায়ীর আলাপ করিয়ে দেন। দুজনে সিনেমার গল্পে মত্ত এমন সময় ডেসার্টের পাত্রগুলো চোখের সামনে থেকে সরিয়ে ফেলা হয়।
এদিকে এক আমলা জানান কোথাও ঘুরতে গেলেই তিনি সেই অঞ্চলের স্থানীয় খাবার খেয়ে দেখতে পছন্দ করতেন।তিনি আরও জানান, “কলকাতায় ফুচকা, হায়দ্রাবাদে বিরিয়ানি আর হালিম, লখনউতে গালোটি কাবাব। তিনি অনেকটা চাট মশলা দেওয়া পকোড়া এবং মশলা চা খুব ভালবাসতেন। আরও এক বিখ্যাত সাংবাদিক পিটিআই-কে অনেকবার জানান, বাজপায়ী তাঁর এবং অন্যান্য সাংবাদিকদের জন্য বেশ কয়েকবার রান্না করেছেন। “তিনি অন্তত একটা খাবার আমাদের জন্য রান্না করতেন। হয় ডেসার্ট বা আমিষ কোনও পদ”, তিনি জানান।
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর আরও একজন সতীর্থ জানান, ক্যাবিনেট মিটিং চলাকালীন তিনি নোনতা বাদাম খেতে পছন্দ করতেন এবং চাইতেন তাঁর সামনে যেন প্লেট ভর্তি নোনতা বাদাম সাজানো থাকে।
বিজেপি নেতা লালজি টেন্ডনকে তিনি লখনউ থেকে কাবাব আনতে বলেছিলেন, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বিজয় গোয়েলকে তিনি বেদমী আলু এবং চাট আনতে বলেছিলেন দিল্লী থেকে। উপরাষ্ট্রপতি বিজেপি নেতা ভেঙ্কাইয়া নাইডুকে ইনি অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে চিংড়ি মাছ আনতে বলেছিলেন- জানান এক ঘনিষ্ঠ নেতা। এক সাংবাদিক যিনি মিস্টার বাজপায়ীর সঙ্গে একবার একটা ট্রিপে গিয়েছিলেন জানান, তাঁর দেখা সবচেয়ে নিরুদ্বেগ প্রধানমন্ত্রী ছিলেন বাজপায়ী।আসলে তাঁর কাছে কোন ট্রিপ মানে শুধু কাজ ছিল না। তিনি যেখানেই যেতেন কাজের মাঝে সেখানকার সমস্ত খাবার উপভোগ করতেন”, জানান ওই সাংবাদিক।