বাংলার সব মেয়েই কন্যাশ্রী! মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির এই ‘স্বপ্ন’ প্রকল্পের আওতায় এল গোটা রাজ্যের মেয়েরাই। মঙ্গলবার পঞ্চম বর্ষ কন্যাশ্রীর উদ্যাপন উপলক্ষে ভাষণ দিতে এসে ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী নিজেই। তিনি বলেছেন, ‘আগামী দিনে সারা বিশ্বে এটি মডেল হবে। কন্যাশ্রী শুধু আমাদের রাজ্যের নয়, গোটা দেশের, বিশ্বেরও গর্বের। কন্যাশ্রীর মেয়েরা সবকিছুকে জয় করবে আগামী দিনে।’
এরপরই মমতা জানিয়েছেন, রাজ্যে এখন ৫০ লক্ষ মেয়ে কন্যাশ্রীর আওতায় রয়েছে। তার বাইরে রয়েছে আরও ৩ লক্ষ। এতদিন যাদের পারিবারিক আয়ের ঊর্ধ্বসীমা ছিল বছরে দেড় লক্ষ টাকা তারাই কন্যাশ্রী প্রকল্পের সুবিধা পেত। মমতা সেই ঊর্ধ্বসীমা তুলে দেওয়ার ঘোষণা করে আরও বলেছেন, ‘এবার থেকে সব মেয়েরাই কন্যাশ্রীর সুযোগ পাবে। সব সিলিং তুলে দিলাম। এ জন্য আরও ২০০ কোটি টাকা খরচ হবে রাজ্যের। কিন্তু মেয়েদের ভবিষ্যতের কাছে এই টাকার অঙ্ক কিছুই নয়।’ মুখ্যমন্ত্রী আরও ঘোষণা করেন, পশ্চিমবঙ্গে নতুন ‘কন্যাশ্রী বিশ্ববিদ্যালয়’ স্থাপন করা হবে। তিনি বলেছেন, ‘কন্যাশ্রীর নামে অনেক প্রকল্প আছে। মেয়েরা এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে ভবিষ্যৎ তৈরি করবে। শুধু কন্যাশ্রীদের জন্যই এই বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি হবে। এই ৫৩ লক্ষ কন্যাশ্রী সদস্যকে এমনভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে যাতে তারা নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে। এটাই তাদের স্বপ্নের ভোর হবে।’ স্বাধীনতা দিবসের ঠিক আগের দিন নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে মমতার এই ঘোষণায় স্বভাবতই উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠে স্কুলপড়ুয়া, কন্যাশ্রীরা। মঞ্চে তখন উপস্থিত মন্ত্রীদের মধ্যে ড. অমিত মিত্র, অরূপ বিশ্বাস, ডাঃ শশী পাঁজা ও সাধন পান্ডে। এ ছাড়াও ইউনিসেফ–এর পক্ষে ইয়াসমিন আলি, রাজ্য মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন লীনা গঙ্গোপাধ্যায়, সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার বোর্ডের সভানেত্রী সুরঞ্জনা চক্রবর্তী, শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন অনন্যা ব্যানার্জি, অধ্যাপক মানবী বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ। অনুষ্ঠানে কন্যাশ্রী প্রকল্পের সফল রূপায়ণের জন্য আলিপুরদুয়ার, মুর্শিদাবাদ ও জলপাইগুড়ি জেলাকে পুরস্কৃত করা হয়। বিশেষ স্বীকৃতি দেওয়া হয় নদিয়া ও কোচবিহার জেলাকে। সেইসঙ্গে কলকাতার ৩টি কলেজ— বিবেকানন্দ, ভিক্টোরিয়া ইনস্টিটিউশন ও সুরেন্দ্রনাথ কলেজ ফর উইমেনসকে সেরা হিসেবে পুরস্কৃত করেন মুখ্যমন্ত্রী।