মোটর ভেহিকেলস অ্যাক্ট (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল প্রত্যাহারের দাবিতে এবং জ্বালানির দাম বৃদ্ধি ও থার্ড পার্টি ইন্সিওরেন্সের হার বৃদ্ধির প্রতিবাদে আজ, মঙ্গলবার দেশজুড়ে পরিবহণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে অল ইন্ডিয়া রোড ট্রান্সপোর্ট ওয়ার্কার্স কো-অর্ডিনেশন কমিটি। সেই ধর্মঘটকে সমর্থন করেছে সিটু, এআইটিউসি, আইএনটিইউসি সহ একাধিক শ্রমিক সংগঠন। অবশ্য এ রাজ্যে ধর্মঘটের কোনও প্রভাব পড়বে না, রাজ্য সচল থাকবে বলেই জানিয়ে দিয়েছেন পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, যেসব ইস্যুতে এই ধর্মঘট ডাকা হয়েছে, সেগুলি সবই কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে। এটা ঠিক যে, কেন্দ্রীয় সরকার যেসব আইন আনছে, তাতে পরিবহণ শিল্পে মারাত্মক প্রভাব পড়বে। কেন্দ্রীয় সরকার নানা ধরনের দমনপীড়নের নীতি নিচ্ছে। পরিবহণের ক্ষেত্রে খুবই সমস্যা হচ্ছে। আমরা দাবিগুলির সঙ্গে একমত। তবে আমরা বন্ধের রাজনীতির বিরুদ্ধে। সিপিএমের বন্ধের রাজনীতির জন্য রাজ্যের সর্বনাশ হয়েছে। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্য থেকে বন্ধ নামক শব্দটাই তুলে দিয়েছেন। যেসব দাবি আছে, তা নিয়ে আলোচনা হতে পারে, তবে বন্ধ করে নয়। বন্ধ মোকাবিলায় রাজ্য সরকার প্রস্তুত আছে। রাজ্য সচল থাকবে।
এই ধর্মঘটের মোকাবিলায় পরিবহণ ভবন থেকে রাজ্যের সব জেলাশাসক, পুলিস সুপার এবং আরটিও’দের নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। সেই নির্দেশে বলা হয়েছে, কোথাও যেন গাড়ি চলাচলে বাধা সৃষ্টি না হয়। রাস্তা থেকে যদি বেসরকারি বাস কমে যায়, তাহলে বেশি সংখ্যায় সরকারি বাস নামাতে হবে। পথচলতি মানুষের যেন দুর্ভোগ না হয়। যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে হবে। কোনও বাধা মানা হবে না। বাড়তি বাস নামানোর পরিকল্পনাও করা হয়েছে বলে পরিবহণ দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে। এদিকে, ধর্মঘটে অংশগ্রহণকারী সিটু নেতা সুভাষ মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, যেসব দাবিতে ধর্মঘট হচ্ছে, তা আমরা সমর্থন করছি। কেন্দ্রীয় সরকারের আইনের জন্য পরিবহণ শ্রমিকরা উদ্বিগ্ন। আমরা রাস্তায় থাকব। পিকেটিং হবে। এরাজ্যেও সরকারের দমনপীড়ন চলছে। তোলাবাজি চলছে। পুলিসি জুলুমের প্রতিবাদ হবে। রাজ্যেও পরিবহণ শ্রমিকরা উদ্বেগে আছেন। তাঁদের নানা সমস্যা ও দাবিদাওয়া নিয়ে প্রতিবাদ হবে।
তবে এই ধর্মঘট নিয়ে তেমন কোনও প্রচার ও হেলদোল নেই। সরকারি স্তরে প্রস্তুতি নেওয়া থাকলেও বাস্তবে এই বন্ধের কতটা প্রভাব পড়বে, তা নিয়ে অভিজ্ঞ মহলে সংশয় রয়েছে। এমনকী অনেক বাসচালক বা পরিবহণ শ্রমিকও জানেন না যে, মঙ্গলবার ধর্মঘট রয়েছে। তবে সিটুর পক্ষ থেকে রাস্তায় নেমে পিকেটিংয়ের হুমকি দেওয়া হলেও রাজ্য সরকার যে সবরকম প্রস্তুতি নিয়েছে, তা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।