প্রায় এক হাজার আয়ূশ ডাক্তার এবং ফার্মাসিস্ট নিয়োগ করতে চলেছে রাজ্য সরকার। এর মধ্যে ৪৫৯ জন চিকিৎসক এবং পাঁচশোর বেশি ফার্মাসিস্ট রয়েছেন। এর মধ্যে থাকবেন হোমিওপ্যাথি, আয়ুর্বেদ এবং ইউনানি চিকিৎসক। সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় থাকার কথা হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকদের। বার্ষিক চুক্তিতে নিযুক্ত হবেন তাঁরা। রাষ্ট্রীয় বাল স্বাস্থ্য কার্যক্রম বা আরবিএসকে-এর অর্থ সাহায্যে এই নিয়োগ করা হচ্ছে বলে দপ্তর সূত্রের খবর। এঁরা জেলায় জেলায় মোবাইল মেডিক্যাল টিমে কাজ করবেন। রাজ্য সরকার ও সরকার পোষিত স্কুল এবং অঙ্গনওয়ারি কেন্দ্রগুলিগুলিতে গিয়ে পড়ুয়াদের বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্যপরীক্ষা করবেন। কী ধরনের স্বাস্থ্যপরীক্ষা করবেন? দপ্তর সূত্রের খবর, এরা মূলত বাচ্চাদের চারটি সমস্যা দেখবেন। রোগভোগ, পুষ্টি ও অন্যান্য বিষয়ে বিভিন্ন খামতি আছে কি না। এছাড়া তাদের কোনও জন্মগত অসুখ এবং বিকলাঙ্গতা আছে কি না—খতিয়ে দেখা হবে তাও।
দপ্তর সূত্রের খবর, চিকিৎসকদের নিয়োগ প্রক্রিয়ার কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। প্রায় পাঁচ হাজার আবেদনপত্র জমা পড়েছে। বর্তমানে আবেদনকারীদের কাগজপত্র যাচাইয়ের কাজ চলছে। তারপর হবে কাউন্সেলিং। সব মিলিয়ে ডাক্তার নিয়োগের কাজ সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে সম্পূর্ণ হয়ে যাবে বলে সূত্রের খবর। তারপর শুরু হবে ফার্মাসিস্ট নিয়োগের কাজ। এ বছরের মধ্যে দুটি কাজই সম্পন্ন হয়ে যাওয়ার আশা করছে স্বাস্থ্যভবন।
দপ্তর সূত্রের খবর, আরবিএসকে কার্যক্রম অনুযায়ী, রাজ্যে ৮২৮টি মোবাইল মেডিক্যাল ইউনিট আছে। প্রতিটি ইউনিটে দু’জন করে ডাক্তার, একজন ফার্মাসিস্ট এবং একজন স্টাফ নার্স থাকার কথা। এই ১৬৫৬ জন চিকিৎসকের মধ্যে রাজ্যের হাতেই রয়েছে বর্তমানে ১১০০ কিছু বেশি সংখ্যক ডাক্তার। বাদ বাকি শূন্যপদ পূরণ করার জন্যই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে দপ্তরের এক সূত্র জানিয়েছে। একইভাবে ৮২৮টি মোবাইল মেডিক্যাল টিমের মধ্যে ৩০০ ’র মতো ফার্মাসিস্ট রয়েছেন। বাদবাকি প্রায় ৫০০ ’র মতো ফার্মাসিস্ট পূরণ করা বাকি। তাহলে তো স্টাফ নার্স পদেও নিয়োগ হওয়ার কথা? এ প্রসঙ্গে এক সূত্র জানিয়েছে, এ বিষয়ে এখনও নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়নি সরকার। কারণ, স্টাফ নার্স চাইলেই পাওয়া মুশকিল। তাই দেখা যাক, ভবিষ্যতে কী হয়।
গোটা বিষয়ে তৃণমূল সমর্থিত প্রোগ্রেসিভ ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন-এর রাজ্য সভাপতি (হোমিওপ্যাথি) ডাঃ শ্যামল মুখোপাধ্যায় বলেন, হোমিওপ্যাথি সহ আয়ূশের বিভিন্ন শাখায় পড়াশোনা করা বহু ছেলেমেয়েরা এই সিদ্ধান্তের ফলে চাকরির সুযোগ পাবেন। মুখ্যমন্ত্রীর এ উদ্যোগকে অভিনন্দন জানাই। অল বেঙ্গল বিএএমএস ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন-এর চেয়ারম্যান ডাঃ পার্থ সরকার বলেন, খুব ভালো খবর। আমাদের আন্দোলনের সুফল। দীর্ঘদিনের দাবি পূরণের জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।