আম আদমির ওপর আক্রমণ থামছেই না। একের পর এক আঘাতে জর্জরিত সাধারণ মানুষও।
গত আর্থিক বছর, অর্থাৎ ২০১৭-১৮ সালের জন্য পিএফের সুদ ঘোষণা করেছে এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট ফান্ড অর্গানাইজেশন বা ইপিএফও। ৮.৫৫ শতাংশ হারে সেই সুদ ঘোষণা করা হয়ে গিয়েছে অনেক আগেই। কিন্তু চলতি আর্থিক বছরের চার মাস পেরিয়ে গেলেও, সেই টাকা এখনও কোনও পিএফ গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে জমা পড়েনি। দেশে এমন গ্রাহকের সংখ্যা প্রায় পাঁচ কোটি। পিএফের পাসবুকে সেই সুদের টাকা দেখতে পারছেন না গ্রাহকরা। তবে পিএফের আধিকারিকরা দাবি করেছেন, শীঘ্রই দিল্লি থেকে ওই টাকা অ্যাকাউন্টে জমা করা হবে।
ফেব্রুয়ারিতে গত আর্থিক বছরের জন্য সুদের হার ঘোষণা করে ইপিএফও’র আওতায় থাকা সেন্ট্রাল বোর্ড অব ট্রাস্টিজ। ওই বোর্ডের মাথায় কেন্দ্রীয় শ্রমমন্ত্রী থাকলেও, যেহেতু সুদ দেওয়ার ক্ষেত্রে অর্থমন্ত্রকেরও অনুমতি দরকার, তার জন্য কিছুটা সময় পিছিয়ে যায়। কিন্তু এরপর কর্ণাটকে বিভানসভা ভোট সামনে চলে আসায়, আদর্শ আচরণবিধির গেরোয় আটকে পড়ে সুদ দেওয়ার বিষয়টি। ওই ভোটের কারণেই নতুন আর্থিক বছরে সুদ দিতে দেরি হয়েছে বলে যুক্তি খাড়া করে পিএফ অফিস। কিন্তু এখনও সেই সুদ জমা না হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত গ্রাহকরা।
গত পাঁচ বছরে পিএফের উপর সবচেয়ে কম হারে সুদ এ বছরই ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। ২০১৬-১৭ আর্থিক বছরের জন্য সেই সুদের হার ছিল ৮.৬৫ শতাংশ। তার আগের বছর সুদ ধার্য হয়েছিল ৮.৮ শতাংশ। সেটিই ছিল সাম্প্রতিক কালের সবচেয়ে বেশি সুদ। তার আগের দু’বছরের জন্য, অর্থাৎ ২০১৪-১৫ এবং ২০১৩-১৪ অর্থবর্ষে সুদের হার ছিল ৮.৭৫ শতাংশ। তার আগের বছর, অর্থাৎ ২০১২-১৩ অর্থবর্ষে সুদের হার ছিল ৮.৫ শতাংশ। সুদ কমায় যেমন একদিকে ক্ষুব্ধ সাধারণ গ্রাহক, তেমনই তা সময়ে অ্যাকাউন্টে না জমা পড়ায় তারা ক্ষুণ্ণ। তবে পিএফের আঞ্চলিক কর্তাদের বক্তব্য, দেশজুড়ে যে সফটওয়্যারটি এখন তাঁদের দপ্তরের প্রশাসনিক কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে, সেটি ততটা কার্যকর না হওয়ার কারেণই বিলম্ব হচ্ছে সুদ প্রদানে। আধিকারিকদের বক্তব্য, আগে আর্থিক বছরের শুরুতেই সুদ জমা পড়ে যেত প্রতিটি অ্যাকাউন্টে। কিন্তু এই বছরই এতটা সময় লাগছে সেই কাজ হতে।
সুদ জমা না পড়ায় কোনও গ্রাহক ততটা অসুবিধায় পড়বেন না বলেই অবশ্য দাবি করেছেন দপ্তরের আধিকারিকরা। তাঁদের দাবি, যদি কোনও ব্যক্তি অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলতে চান, তাহলে তাঁকে সুদ সমেতই টাকা দেওয়া হবে। সেক্ষেত্রে হাতেকলমে হিসেব করে সেই টাকা গ্রাহককে দেবে দপ্তর। তবে যে সময় দপ্তর সমস্ত পিএফ অ্যাকাউন্টে সুদ দেওয়ার কাজে হাত দেবে, তখন অবশ্য সমস্ত ‘ক্লেম’ বা দাবিদাওয়া মেটানোর কাজ বন্ধ থাকবে। সেক্ষেত্রে অনলাইনে বা হাতে হাতে টাকা তোলার আবেদন ‘প্রসেসিং’য়ের কাজও থমকে থাকবে বলে জানিয়েছেন দপ্তরের কর্তারা।
আচ্ছে দিনের মোদি মডেলের নমুনা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।