মশানজোড় বাঁধের দু’পাশের তোরণে থাকা বিশ্ববাংলা লোগো ঝাড়খণ্ড সরকারের লোগো দিয়ে ঢেকে এবং তোরণে লেখা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উপর ঝাড়খণ্ডের স্টিকার সেঁটে দিল সে রাজ্যের বিজেপি নেতৃত্ব। শুক্রবার সকালে বিষয়টি নজরে আসতেই চাঞ্চল্য ছড়ায় রাজ্য প্রশাসনে। সেচমন্ত্রী পুরো বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়ে এফআইআর করার নির্দেশ দেন। সেচ দপ্তর বাঁধের রং নীল-সাদা করা শুরু করলে তাতেও বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠছে গেরুয়া বাহিনীর বিরুদ্ধে। অসমে তৃণমূল সংসদ সদস্য, মন্ত্রীদের হেনস্তা নিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছে তৃণমূল। তখনই পার্শ্ববর্তী আরেক বিজেপি শাসিত রাজ্যের বাংলা বিদ্বেষ প্রকাশ পেল। মশানজোড় জলাধারটি ঝাড়খণ্ডের দুমকা জেলার অন্তর্গত হলেও বাঁধের রক্ষণবেক্ষণ সহ সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সেচদপ্তর। দীর্ঘদিন ধরেই এই ব্যবস্থা চলে আসছে। এমনকী তোরণগুলিও বহুদিনের। তাই হঠাৎ তোরণের বিকৃতি করা ও রং করা আটকানো নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের দাবি, মমতা বন্দোপাধ্যায়ের উন্নয়নের প্রতীক হয়ে উঠেছে নীল-সাদা রং। তাই ভিন রাজ্যেও বিজেপি আতঙ্কিত। যদিও বিজেপি তা অস্বীকার করেছে।
সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র বলেন, আমি পুরো বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীর গোচরে এনেছি। দপ্তর থেকে একটি এফআইআরও করা হচ্ছে। অত্যন্ত গর্হিত কাজ, আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। কোনওমতেই আমরা উন্নয়নের কাজ ওখানে থামাব না। জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু বলেন, বিষয়টি মৌখিকভাবে শুনেছি। আন্তঃরাজ্য বিষয়, পুরো বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
বন্যার হাত থেকে বিস্তীর্ণ এলাকাকে বাঁচাতে এবং চাষের জল সুষ্ঠুভাবে দেওয়ার জন্য ময়ূরাক্ষী নদীর জল নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে ১৯৫৫সালে মশানজোড় ড্যাম গড়ে ওঠে। পুরো প্রজেক্টই পশ্চিমবঙ্গের অন্তর্গত হলেও ড্যামের জায়গাটি ঝাড়খণ্ডের অন্তর্গত। তাহলেও ড্যামের রক্ষণাবেক্ষণের সম্পূর্ণ দায়িত্ব রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উপর। ড্যামের দু’পাশে যে দু’টি তোরণ রয়েছে সেখানে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বোর্ড এবং লোগো দীর্ঘদিন ধরেই রয়েছে। সম্প্রতি বাঁধ সংস্কার, বাঁধ সংলগ্ন সরকারি আবাসনগুলি সংস্কার ও রং করার জন্য ১কোটি ৮২লক্ষ টাকা অনুমোদন করে সেচ দপ্তর। সেই মতো আবাসনগুলির নীল-সাদা রং করার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। অন্যদিকে, বাঁধের একাংশ নীল-সাদা রং শুরু হতেই ঝাড়খণ্ডের দুমকা জেলার বিজেপি নেতৃত্ব বাধা দেয়। যদিও দপ্তর সেই সময়ে বিষয়টি গুরুত্ব দেয়নি, কোনও লিখিত অভিযোগও হয়নি। কিন্তু এদিন গেরুয়া বাহিনী কার্যত বাঁধের সম্পূর্ণ দখল নেওয়ার উদ্যোগ নিল। বাঁধে তোরণের উপর পশ্চিমবঙ্গ সরকার লেখার উপর স্টিকার দিয়ে ঝাড়খণ্ড লিখে দিয়েছে। এমনকী বিশ্ব বাংলা লোগোর উপর ঝাড়খণ্ডের লোগো সেঁটে দিয়েছে।