নিজ ভূমেই পরবাসী ৪০ লাখ মানুষ। অসমের নাগরিক পঞ্জিকরণ তালিকার দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত খসড়া নিয়ে দেশজুড়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। শাসক বিরোধী চাপানউতুরো উত্তাল সংসদ। অসমে সুপ্রিম কোর্টের রায়কে ঢাল করে কেন্দ্র মানবাধিকার লংঘন করেছে বলে মঙ্গলবার রাজ্যসভায় অভিযোগ করেন তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায়।
এদিন রাজ্যসভায় বাংলায় কেন্দ্রকে নিশানা করেন সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায়। তিনি বলেন, “৪০ লাখ মানুষ আজ রাষ্ট্রহীন। এই ধরনের ঘটনা গোটা বিশ্বে নজির।” সোমবার খসড়া নাগরিক পঞ্জিকরণ তালিকা প্রকাশের পরই দেখা গিয়েছে সরকারী কর্মী, আবসরপ্রাপ্ত সামরিক বাহিনীর সদস্য, এমনকি প্রাক্তণ বিধায়কেরও নাম নেই সেখানে। উদ্বেগজনক এই বিষয়টি উল্লেখ করে ওই তৃণমূল সাংসদের প্রশ্ন, “৬মাস আগে যে তালিকা এনআরসি প্রকাশ করেছিল, তাতে আসামে ডাউটফুল নাগরিকের সংখ্যা ছিল ২লক্ষ ৪০ হাজার জন। এর মধ্যেই সেই সংখ্যা কীভাবে ৪০ লাখে হয়ে গেল?” গোটা ঘটনায় তদন্তের অবকাশ রয়েছে বলে মনে করেন তিনি।
বিরোধীদের তোপের মুখে কেন্দ্র ঢাল করেছে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকে। সোমবারই সংসদে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্টমন্ত্রী বলেন, “এনআরসি রিপোর্ট তৈরি হচ্ছে সুপ্রিম কোর্টের তত্ত্বাবধানে। এখানে কেন্দ্রের কোনও ভূমিকা নেই”। রাজনাথ সিং-এর এই সাফাই মানুষকে বিভ্রান্ত করছে বলে অভিযোগ তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায়ের। তিনি বলেন, “সুপ্রিম কোর্টের অর্ডার দেখিয়ে কেন্দ্র জনবিরোধী কাজ করছে”। অবিলম্বে আসামের এনআরসি-র তালিকা প্রত্যাখ্যান করারও দাবি করেন তিনি। কেন্দ্র দেশের সিটিজেন অ্যাক্ট ও রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার পদদলিত করছে বলেও সংসদে জানান তৃণমূল সাংসদ।
শুধু কেন্দ্রীয় সংস্থা নয়, নাগরিকপঞ্জিকরণ তালিকা তৈরিতে মানবাধিকার সংস্থার নজরদারির পক্ষেও এদিন সওয়াল করেন রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ। দাবি করেন আসাম নাগরিক পঞ্জিকরণ তালিকার বিষয়ে সংসদে বিবৃতি দিন প্রধানমন্ত্রী।
আসাম নিয়ে সংসদের বাইরে সরব হয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো সহ বিরোধীরা। আর সংসদে সোচ্চার বিরোধী সাংসদরা। লোকসভা ভোটের আগে আসাম নিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে বিরোধীরা যে সুর চড়াবে গত কয়েক ঘন্টাতেই তা পরিষ্কার।