শুধু প্রতিশ্রুতি বা গালভরা বিজ্ঞাপন নয়। গ্রামে গ্রামে দুঃস্থ অসহায় মহিলাদের স্বনির্ভর করে তাদের জীবন পাল্টে দিচ্ছে পঞ্চায়েত ও ব্লক প্রশাসন। মুখ্যমন্ত্রীর স্বামী বিবেকানন্দ কর্মসংস্থান প্রকল্প ও মুক্তিধারা প্রকল্পের অভুতপুর্ব রুপায়ন করছে পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রশাসন। গ্রামে গ্রামে গৃহবধুদের সরকারী ভর্তুকির টাকায় ঋন প্রদানের ব্যবস্থা ও প্রশিক্ষন যেন নতুন দিন এনেছে।
অলোক রুইদাস। পশ্চিম বর্ধমানের অন্ডাল ব্লকের রামপ্রসাদপুর গ্রামের বাসিন্দা। অলোকার স্বামী নৃপেন রুইদাস দিনমজুর। একমাত্র মেয়ে প্রিয়াঙ্কা একাদশ শ্রেনীতে পড়ছে। কিন্তু নৃপেন বাবুর একা রোজগারে সংসার, মেয়ের পড়াশুনো টানা সম্ভব হচ্ছিল না। ভাঙা টালির ঘরে বসে সেই অভাবের কথা অনুভব করছিলেন অলোকা নিজেও। বন্ধুদের কাছে শুনেছিলেন ব্লক অফিস থেকে নাকি ঋনের জন্য সহায়তা করা হচ্ছে। সেই মত একপ্রকার মনে অবিশ্বাস নিয়েই অন্ডাল ব্লক অফিসের স্বনির্ভর গোষ্ঠি ও স্বনিযুক্তি বিভাগের সুপারভাইসারের সাথে দেখা করেন অলোকা। অলোকা জানিয়েছেন, “প্রথমে বিশ্বাসই করতে পারিনি, ঋন পাওয়া এতটাই সোজা”।
স্বামী বিবেকানন্দ কর্মসংস্থান প্রকল্পে ঋনের জন্য অলোকাকে আবেদন করতে বলেন সুপারভাইসার মিঠুন মন্ডল। মিঠুন বাবু জানান, এই প্রকল্পে ঋনের ৩০ শতাংশ টাকা আর শোধ করতে হয়না। সেই ভর্তুকি রাজ্য সরকার দেয়। অলোকা ই-রিক্সার জন্য ঋনের আবেদন করেন। সেই মত ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা ঋন পেয়েছেন অলোকা। যার মধ্যে সরকারী ভর্তুকি ৫১ হাজার। নতুন ই-রিক্সা কিনে নিজেই চালাচ্ছেন অলোকা। অন্ডাল স্টেশন থেকে অন্ডাল বাজার ও গ্রামে গঞ্জে যাত্রীদের পৌঁছে দিচ্ছেন। প্রতিদিন ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা রোজগার হচ্ছে। ঘরকন্নার কাজ সামলেই ই-রিক্সা নিয়ে বেরিয়ে পড়ছেন অলোকা। হঠাত করেই যেন জীবনে পরিবর্তন এসেছে তার। পরিবারেও এসেছে খুশির আলো।
অলোকা জানালেন, “দিদির কথা শুনতাম টিভিতে। তখনই স্বপ্ন দেখতাম। ভাবিনি স্বপ্ন সত্যি হওয়া এত সোজা। আমি আমার মেয়েকে পড়াশুনো করিয়ে এবার অনেক বড় করে তুলতে পারব। গ্রামের অনান্য মেয়েদেরও বলেছি, ব্লক অফিসে যোগাযোগ করতে। সত্যি এখন খুব ভাল আছি।”