মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কৌশলি চালে মোদীর কপালে চিন্তার ভাঁজ। দিশাহারা বিজেপি।
ফেডারেল ফ্রন্টের শরিকদের নিয়ে জানুয়ারিতে ব্রিগেডে সমাবেশের ডাক দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই ২৩শে জানুয়ারী জবাবি সভা করতে চলেছেন মোদী। শুক্রবার লোকসভায় দিনভর অনাস্থা বিতর্কে মুখোমুখি ছিলেন মোদী-রাহুল। শনিবার ধর্মতলার জনপ্লাবনে দাঁড়িয়ে তৃণমূল নেত্রীর হুংকার আগামী লোকসভা ভোটে পাশা উল্টোবে। রবিবার বিরোধী রাজনীতিতে নিজেদের প্রাসঙ্গিকতা বাড়াতে দলের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে মহাজোটের ডাক দিয়েছেন রাহুল গান্ধী। বিরোধী শিবিরের এই তোড়জোরে শঙ্কিত গেরুয়া বাহিনী।
দেশের বিভিন্ন রাজ্যে বিরোধীরা একজোট হয়ে অভিন্ন প্রার্থী দিক। সমস্ত আঞ্চলিক দলকে নিয়ে এভাবেই ফেডারেল ফ্রন্টের মহড়া শুরু করেছেন মমতা। উত্তরপ্রদেশে মায়াবতীর বহুজন সমাজ পার্টি ও অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী পার্টির মধ্যে বোঝাপড়ার সুফল ইতিমধ্যেই পাওয়া গিয়েছে। ওই রাজ্যের দু’টি লোকসভা উপনির্বাচনে পর্যুদস্ত হয়েছে বিজেপি। মমতার দাবি, দেশের মোট ৭৫টি আসনে বোঝাপড়া করে বিরোধীরা বিজেপি’র বিরুদ্ধে প্রার্থী দিলে হিন্দুত্ববাদীদের পরাজয় অনিবার্য। মমতার এই অঙ্কই মোদী-অমিত শাহদের চাপে ফেলে দিয়েছে।
মমতা ব্রিগেড সমাবেশের ঘোষণা করার সঙ্গে সঙ্গেই মোদীকে এনে পাল্টা সভা করার কথা ঘোষণা করেছে বিজেপি। শুধু তাই নয়, পঞ্চায়েত ভোটে পরাজিত হওয়ার পর আসন্ন লোকসভা ভোটের কথা মাথায় রেখেই কৃষক সমাজের কাছে পৌঁছতে মেদিনীপুরে নরেন্দ্র মোদীকে জনসভা করতে হয়েছে। বিজেপি’র সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহকেও এরাজ্যের সংগঠনে বাড়তি নজর দিতে হচ্ছে। মাত্র পাঁচ সপ্তাহের ব্যবধানে রাজ্যে আসছেন তিনি। এই উদ্যোগ থেকেই স্পষ্ট বিরোধীদের ঠেকাতে কোমড় বাঁধছে মোদী, শাহ জুটি।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ব্যাখ্যা, দেশের আর কোনও আঞ্চলিক দলের পক্ষে লোকসভায় তৃতীয় বৃহত্তম দল হওয়া অসম্ভব। রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক শক্তির নিরিখে নিজের রাজ্যের এই নিশ্চয়তাই তাঁকে জাতীয় স্তরে মোদী বিরোধী জেহাদে অগ্রণী ভূমিকা নিতে সাহায্য করছে। এইসব দলের কাছে মমতার গ্রহণযোগ্যতাও বেড়ে চলেছে। স্বভাবতই রাহুলের মহাজোটের ডাকের থেকেও মোদী-অমিত জুটির কাছে মমতাই এখন বড় বিপদ। তাই ঝুঁকি না নিয়ে বাংলায় তৎপরতা বাড়াচ্ছে বিজেপি।