১৯শের ভোটে সমমনোভাবাপন্ন বিরোধী দলের সঙ্গে আগাম জোট করেই লোকসভায় লড়তে চায় কংগ্রেস৷ জোট-প্রস্তাবের উপরেই সিলমোহর দিল শতাব্দী প্রাচীন দলের কার্যসমিতির সদস্যরা৷ তবে কোন দলের সঙ্গে কি শর্তে জোট হবে তা নির্ধারণের সিদ্ধান্ত কমগ্রেস সভাপতির হাতেই ছেড়ে দিয়েছে কংগ্রেসের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারক কমিটি৷ একই সঙ্গে তৃণমূলের সঙ্গে জোটের সম্ভাবনার কথাও স্পষ্ট করা হয়েছে কংগ্রেসের তরফে৷
কার্যসমিতির বৈঠক শেষে কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা বলেন, ‘জোটের বিষয়ে কংগ্রেস সভাপতি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন ৷ বাংলায় তিনি বা তাঁর মনোনীত নেতা সংশ্লিষ্ট দলের সঙ্গে কথা বলবেন৷ মমতা বন্দ্যোপাধায় কংগ্রেসের প্রাক্তনী৷ মমতাকে কংগ্রেস সম্মান করে৷ ওঁর কর্মভূমিও ছিল কংগ্রেস৷ তিনি কী বলেছেন তা নিয়ে বিবাদে যাবে না কংগ্রেস৷ তাঁর সঙ্গে যখন কথা বলার দরকার তখন অবশ্যই কথা বলা হবে৷’
সুরজেওয়ালা অবশ্য এর সঙ্গে এটাও স্মরণ করিয়ে দেয়েছেন, ‘প্রতিটি জোটের ক্ষেত্রেই ‘গিভ অ্যান্ড টেকের’ বিষয় থাকে৷ জোটের আগে সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়াও ঠিক নয়৷ আর জোট নিয়ে আলোচনার আগে যে যা বলছেন তা সব সময় ঠিক হবে এমন নয়৷
ওয়ার্কিং কমিটিতে কংগ্রেস সভাপতি বলেছেন, ‘‘জোট করার সময় কংগ্রেসের স্বার্থ ও দেশের স্বার্থ দুটোই দেখা হবে৷ দেশের স্বার্থে বৃহত্তর জোট করতেও তাঁর কোনও আপত্তি নেই৷’’
এর মধ্যেই দল জিতলে রাহুল যাতে প্রধানমন্ত্রী হন, তা নিয়ে একপক্ষ জোরও করে। কিন্তু সোনিয়া তনয় সে কথা খারিজ করে বলেছেন, ‘’জোটধর্ম ও বৃহত্তর রাজনীতির কথা ভাবতে হবে।‘’ তবে সুরজেওয়ালা এও স্পষ্ট করেছেন, ‘’যদি লোকসভা ভোটে কংগ্রেস ২০০-র কাছাকাছি আসন পায়, তা হলে রাহুল গান্ধীই স্বভাবিক ভাবে বিরোধী জোটের নেতৃত্ব দেবেন৷’’ অর্থাৎ ২০০-র বেশি আসন বা সবথেকে বড় দল হতে পারলে রাহুলকেই যে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দিতে হবে বলে কংগ্রেস এখন থেকেই জানিয়ে রাখল৷ আর কম আসন পেলে জোটের অন্য কাউকে এই পদ ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টি খোলামনে বিচার করার ইঙ্গিতও দেওয়া হয়েছে৷ ওয়ার্কিং কমিটির সিদ্ধান্ত থেকে স্পষ্ট, ভোটের ফলের আগে জোটের নেতা বাছাই হবে না৷
সনিয়া-রাহুল-মনমোহন থেকে শুরু করে প্রায় সব নেতাই এ দিন জোটের পক্ষে কথা বলেছেন৷ প্রাক্তণ অর্থমন্ত্রী মমতার সুরে সুর মিলিয়ে বলেছেন, ‘’বিজেপি-র প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিরোধীদের তরফে একজন প্রার্থী দাঁড় করাতে হবে৷ তা হলেই নরেন্দ্র মোদী কোনওভাবেই লোকসভা নির্বাচনে জিততে পারবেন না৷ বিরোধীরাই জিতবেন৷
অর্থাৎ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উল্লিখিত একের বিরুদ্ধে এক জন প্রার্থী দাঁড় করানোর ফর্মুলায় সায় দিয়েছেন অধিকাংশ নেতাই৷