হাতের কাছে এক টুকরো কাগজ আর একটা পেন বা পেনসিল পেলেই নিজের অজান্তেই কখন আঁকিবুঁকি কাটতে শুরু করেছেন জানেনইনা। এমনটা কি প্রায়শই ঘটে? তাহলে আপনি একজন ডুডলার। অর্থাৎ আপনি ডুডল করেন। হ্যাঁ। আনমনে আঁকিবুঁকি কাটার অভ্যাসের পোশাকি নাম ডুডল।
খুব হালকা ভাবে নেবেন না এই অভ্যাসকে।জানেন কি এখনও পর্যন্ত যারা আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হয়েছেন তাঁদের মধ্যে অর্ধেকেই ডুডল করতে ভালোবাসতেন? এদের মধ্যে থিয়োডোর রুজভেল্ট, জন এফ কেনেডি, এবং রোনাল্ড রেগানও রয়েছেন। কারণ ডুডল করার উপকারিতাও নেহাত কম নয়। যারা ডুডল করেন না তাঁরাও কিন্তু এই অভ্যাস শুরু করতে পারেন।নিয়মিত ডুডল করার অভ্যাস আপনাকে কাজের জীবনে অনেকটা এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে। নতুন কিছু শিখতেও আগ্রহী করে তুলবে।এক ঝলকে চোখ বুলিয়ে দেখে নিন তাহলে।
ডুডল আপনাকে মনঃসংযোগ বাড়াতে সাহায্য করে। রীতিমত পরীক্ষা করে দেখা গেছে ডুডল করতে করতে আপনি যদি কোনও লম্বা বক্তৃতা শোনেন, অন্যদের তুলনায় আপনার সেই বক্তৃতার বক্তব্য মনে রাখার সম্ভাবনা অনেক বেশি। খেয়াল করে দেখবেন কোনও সেমিনারে বা ক্লাসরুমে লেকচার চলাকালীন আমরা একঘেয়েমি কাটাতে নোটবুকে আঁকিবুঁকি কাটতে থাকি। এই অভ্যাস আসলে আপনাকে বিষয়ের গভীরে ঢুকতে সাহায্য করছে। কোনও একটা বিষয় নিয়ে ভাবার সময় ডুডল করলে, দেখবেন আপনি ওই নির্দিষ্ট বিষয়টি ছাড়া অন্য কিছু ভাবছেন না।
ডুডল আপনার মধ্যে একটা সৃজনশীল মনোভাব জাগিয়ে তুলতে সাহায্য করবে। একটু অন্যরকম ভাবনা চিন্তা করার ক্ষমতা তৈরি হবে। নিজের কাজ নিয়ে নতুন নতুন আইডিয়া আসবে। কল্পনাশক্তি বাড়বে। কোনও সমস্যার চট করে সমাধান করার ব্যাপারেও আপনাকে দক্ষ করে তুলতে পারে এই সহজ অভ্যাস।
খেয়াল করে দেখবেন কোনও একটা বিষয় নিয়ে কাজ করার সময় বেশি চিন্তা করতে করতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের দিকে নজর করতে ভুলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ডুডল এই ভুলের হাত থেকে বাঁচাতে পারে। তাই যখন বড় কোনও কাজ করবেন তখন ডুডলের মাধ্যমে কাজটি পরিকল্পনা করার চেষ্টা করুন। দেখবেন কাজের প্রত্যেকটা গুরুত্বপূর্ণ দিক নিয়ে আপনি স্বচ্ছ ভাবে ভাবনাচিন্তা করতে পারছেন। শুধু তাই নয় পুরো কাজটি কি ভাবে সম্পন্ন হবে, সেই সম্পর্কে একটা পরিষ্কার ছবিও তৈরি হবে।
নতুন কিছু একটা শিখবেন বলে ঠিক করেছেন। নিয়মিত ডুডল করার অভ্যাস। আপনকে কোনও কিছু নিখুঁত ভাবে শিখতে সাহায্য করবে। নতুন কিছু শেখার ঠিক আগের কিছু মুহূর্ত ডুডল করুন। দেখবেন নতুন বিষয়টি অনেক সহজে শিখে নিতে পারছেন।
কাজের চাপে স্ট্রেসড হয়ে পড়েছেন। তাহলে খানিকক্ষণ ডুডল করুন। দেখবেন স্ট্রেস কখন গায়েব হয়েছে। আপনি খেয়ালই করেননি।
এমনিতে ডুডল করার জন্য ১২ টি আকার বা শেপ রয়েছে। সেগুলো সম্পর্কে একটু গুগল করেও জেনে নিতে পারেন।
যারা নতুন নতুন ডুডল করছেন, তাঁদের জন্য কয়েকটা টিপস কাজে লাগতে পারে। যেমন পারফেকশন নিয়ে মাথা ঘামাবেন না। ডুডলের গোড়ার কথাই হলো ফ্রি স্টাইল। কোনও নির্দিষ্ট নিয়ম নেই। কাগজে ইচ্ছে মতো কলমের আঁচড় দিন। তবে তাতেও আত্মবিশ্বাস না পেলে ইউটিউব তো হাতের কাছে আছে। ইউটিউবে এমন অজস্র চ্যানেল আছে, যা আপনাকে ডুডল সম্পর্কে একটা স্পস্ট ধারণা করতে সাহায্য করবে।