অনাস্থা প্রস্তাব বিতর্কে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে একের পর এক চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ শানিয়ে সবে মাত্র ভাষণ শেষ করেছেন রাহুল গান্ধি। তারপরই লোকসভা সাক্ষী থাকলো এক বিরল দৃশ্যের। প্রধানমন্ত্রীকে গিয়ে জড়িয়ে ধরলেন বিরোধী পক্ষের প্রধান বক্তা রাহুল গান্ধী। হঠাৎ এই দৃশ্য দেখে কিছুটা হতবাক শাসক, বিরোধী পক্ষের সাংসদরা।
সংসদীয় বিধিনিষেধের তোয়াক্কা না করে এদিন লোকসভায় ২০১৯ নির্বাচনে বিরোধীদের সুর বেঁধে দেওয়ার চেষ্টা করেন কংগ্রেস সভাপতি। গণধোলাইয়ে মৃত্যু থেকে রাফালে চুক্তি। এদিন মোদী সরকারের উদ্দেশে চরম আক্রমণ শানান রাহুল। রাহুলের বক্তব্যের মধ্যে চরম শোরগোল শুরু হলে অধিবেশন কিছুক্ষণের জন্য মুলতুবি করে দেন স্পিকার সুমিত্রা মহাজন।
রাহুল বলেন, ‘দেশের কৃষকদের কথা শ্রমিকদের মনের কথা প্রধানমন্ত্রী শুনতে পান না। প্রধানমন্ত্রী ব্যস্ত ধনীদের নিয়ে। প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন বছরে ২ কোটি চাকরি দেবেন। কোথায় চাকরি?’। প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে সোনিয়া তনয় বলেন, ‘প্রত্যেকের অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ টাকা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। কোথায় সেই টাকা।’ রাহুলের দাবি, কৃষকের বদলে ধনকুবেরদের ঋণ মকুব এই সরকারের অগ্রাধিকার।
রাহুলের দাবি, দেশের নারী, সংখ্যালঘু, দলিত কেউ সুরক্ষিত নয়। আর এব্যাপারে নীরব প্রধানমন্ত্রী।
এদিন রাফালে চুক্তি নিয়েও মোদী সরকারকে বেঁধেন রাহুল। সেজন্য ফরাসি প্রেসিডেন্টের নাম করে রাহুল গান্ধী বলেন, ‘একজন বিশিষ্ট ব্যবসায়ীকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার জন্য এই চুক্তি করেছে মোদী সরকার।’ এমনকী প্রতিরক্ষা মন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ রাফালে চুক্তি নিয়ে মিথ্যে বলেছেন বলেও দাবি করেন রাহুল। বলেন, ‘কী করে ১,৬০০ কোটি টাকা হল একএকটি বিমানের দাম।’
চালাকি ধরে ফেলায় প্রধানমন্ত্রী তাঁর দিকে তাকাতে পারছেন না বলেও কটাক্ষ করেন মোদীকে।
রাহুলের লাগাতার আক্রমণে এদিন সরগরম হয়ে ওঠে লোকসভা। পরে রসিকতার সুরে রাহুল বলেন, ‘বিজেপি ও আরএসএস আমাকে ভারতীয় হওয়ার মানে বুঝিয়েছে। আমাকে হিন্দু হওয়ার মানে বুঝিয়েছেন। আপনাদের বিরুদ্ধে আমার হাজারো অভিযোগ আছে। আপনারা আমাকে পাপ্পু বলেন। কিন্তু তাতে আপনাদের প্রতি আমার শ্রদ্ধা ও ভালবাসায় এতটুকু ভাটা পড়েনি।’
এর পরই বিরোধী আসন থেকে উঠে এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে জড়িয়ে ধরেন রাহুল গান্ধী। প্রাথমিক ভাবে রাহুলের এহেন আচরণে প্রধানমন্ত্রী কিছুটা হকচকিয়ে গেলেও পরে রাহুলের সঙ্গে হাত মেলান তিনি।