নামেই কৃষক দরদি। বাস্তবে কৃষি, কৃষকের উন্নয়ন নিয়ে খুব একটা বলার ছিল না মোদী সরকারের। তাই মেদিনীপুরের সভার শুরু থেকে প্রধানমন্ত্রীর আক্রমণের লক্ষ্য ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সভার শুরুতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে খোঁচা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন,‘’আমাকে স্বাগত জানানোর জন্য মমতাদিদিকে অসংখ্য ধন্যবাদ।‘’ সোশ্যাল মিডিয়ায় মোদীর সমালোচনার কড়া জবাব দিয়েছেন তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও সাংসদ ডেরেক’ও ব্রায়েন। তাঁদের মতে, ‘’এবার ২১শে জুলাইয়ের ২৫ বছর। তাই রাজ্য জুড়ে লাগানো হয়েছে দলীয় ব্যানার, ফেস্টুন।‘’ উল্টে তৃণমূলের অভিযোগ, বিজেপি কর্মীরা সেই জননেত্রীর ছবি দেওয়া পোস্টার, ব্যানার ছিঁড়ে দিয়েছে।
প্রতক্ষদর্শীদের মতে, মেদিনীপুরে কৃষকদের জন্য সভায় ভিড় জমাতে প্রতিবেশী ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা থেকে লোক ভাড়া করেছিল বিজেপি। সভাস্থল থেকে উদ্ধার হয়েছে পাটনার নম্বর প্লেট দেওয়া যানবাহনও। মেদিনীপুরে প্রধানমন্ত্রীর সভা সফল করতে কর্পোরেটরা বিনিয়োগ করেছে বলেও এদিন অভিযোগ তৃণমূলের। এই সভা থেকে কৃষকরা কী ভাবে উপকৃত হবেন তা পরিষ্কার নয় বলেও দাবি রাজ্যের শাসক দলের।
প্রধানমন্ত্রীর সভায় প্রতিশ্রুতির বন্যা। ২০২২ সালের মধ্যে কৃষকের আয় দ্বিগুণ করার লক্ষ্যে কেন্দ্র কাজ করছে বলে এদিন দাবি করেন মোদী। তৃণমূলের দাবি, এই প্রতিশ্রুতি অনেক বছর আগে থেকেই করে আসছে গেরুয়া বাহিনী। কিন্তু প্রতিশ্রুতি সফল করতে কোন পদক্ষেপই হয়নি। যুক্তি হিসাবে বেশ কয়েকটি পরিসংখ্যানও তুলে ধরা হয়েছে। রাজ্যের শাসক দলের দাবি, গত সাত বছরে বছরে কৃষকের আয় বেড়েছে প্রায় ২.২৫ গুণ।
মেদিনীপুরে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, কৃষকদের উন্ননে রাজ্য কিছুই করেনি। তথ্য বলছে ২০১৭ সালে বিজেপি শাসিত মহারাষ্ট্রে যেখানে কৃষক মৃত্যুর হার ৬৩৫ সেখানে পশ্চিমবঙ্গে তার সংখ্যা শূন্য। এই পরিসংখ্যানই প্রমাণ করে দেশের বাস্তব চিত্রটা আসলে কেমন।
প্রধানমন্ত্রী সিণ্ডিকেট নিয়েও এদিন তীব্র সমালোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রীর। পাল্টা কটাক্ষ ছুঁড়ে দেয় তৃণমূলও। তাদের দাবি, আগুন নিয়ে খেলছে বিজেপি। সিণ্ডিকেটের বিষয়টি গেরুয়া শিবিরের নেতাদের থেকে কে ভালো জানেন?
মোদিনীপুরে বিজেপির সমালোচনার জবাব দিয়ে তৃণমূলের হুঁশিয়ারি, কেন্দ্রীয় বিভিন্ন এজেন্সি দিয়ে রাজ্যের শাসকদলকে ঘায়েল করার চেষ্টা হলেও তাতে তৃণমূলকে রোখা যাবেনা। উন্নয়নের এজেন্ডা না থাকার কারণেই এই ধরনের ভিত্তিহীন রাজনৈতিক সমালোচনা বলে দাবি তাদের।
তবে ভোটের কথা ভেবে বিজেপির এই আক্রমণ হলেও আখেরে কোনও লাভ হবে না বলে দাবি তৃনমূলের।