নীতি আয়োগের প্রাক্তন উপাধ্যক্ষ অরবিন্দ পানাগড়িয়ার মন্তব্যে ‘জিও’ প্রশ্নে ফাঁপরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এ যাবৎ জিয়ো সংক্রান্ত বিতর্কের কেন্দ্রে ছিলেন কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর ও তাঁর মন্ত্রক। বিতর্কের মুখ সোজা প্রধানমন্ত্রীর দিকে ঘুরিয়ে দিয়েছেন অরবিন্দ পানাগড়িয়া। তিনি বলেছেন, ‘জিওর মতো অস্তিত্বহীন একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে উৎকর্ষের শিরোপা দেওয়াটা যথেষ্ট সাহসী পদক্ষেপ। আর সেটা সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী মোদীর জন্য। পানাগড়িয়ার দাবি, ঝুঁকি থাকলেও মোদীর মতো সাহসী ব্যক্তিই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা রাখেন।’
পানাগড়িয়া বলেছেন, ‘জিও’কে ওই মর্যাদা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নীতিগত ভাবে সমর্থনযোগ্য। তাঁর যুক্তি, ‘নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে শুরু থেকেই নির্দিষ্ট নিয়মবিধি চালু করা সুবিধের। কারণ, পুরনো প্রতিষ্ঠানগুলিতে নতুন কোনও পরিবর্তন আনা বেশ কষ্টকর।’
নীতি আয়োগের প্রাক্তন উপাধ্যক্ষ অরবিন্দ পানাগড়িয়ার এই মন্তব্যে যথেষ্ট অস্বস্তিতে বিজেপি শিবির। নীতি আয়োগের প্রাক্তন কর্তার এই স্তুতি রাজনীতির ময়দানে ব্যুমেরাং হওয়ার আশঙ্কায় মুখে কুলুপ এঁটেছে শাসক শিবির।
গোটা ঘটনায় কংগ্রেসের কটাক্ষ, সত্যিই ‘সাহসে’র ব্যাপার। ‘সাহস’ না থাকলে অস্বিস্তহীন প্রতিষ্ঠানকে কেউ কি উৎকর্ষের শিরোপা দিতে পারে।
চলতি সপ্তাহে দেশের ছ’টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে উৎকর্ষের শিরোপা দেয় কেন্দ্র। এর পাঁচটিতে দীর্ঘদিন ধরে পঠন-পাঠন চালু থাকলেও, ‘জিও’ প্রতিষ্ঠানটি এখনও রয়েছে খাতায়-কলমে। কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্ন্য়ন মন্ত্রকই স্বীকার করেছে, ‘এখনও পর্যন্ত শুধু জমি কেনা হয়েছে প্রস্তাবিত প্রতিষ্ঠানটির।‘ তাও মুকেশ অম্বানীর প্রস্তাবিত ‘জিও’কে শিক্ষা উৎকর্ষের শিরোপা দেয় কেন্দ্র। আইআইটি দিল্লি-মুম্বই, কিংবা বিটস পিলানির মতো জাতীয় স্তরে স্বীকৃত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে একাসনে বসে ‘জিও’।
দেশব্যাপী সরকারের ওই সিদ্ধান্তের সমালোচনা শুরু হয়। বেকায়দায় পড়ে কেন্দ্র একাধিক যুক্তির জাল সজিয়ে বিষয়টিকে যখন ধামাচাপা দিতে মরিয়া, তখন নীতি আয়োগের প্রাক্তন কর্তা পানাগড়িয়ার মন্তব্য নতুন করে বিতর্ক উস্কে দিল বলে মত পর্যবেক্ষকদের।