ক্ষমতা হারানোর পর থেকেই পশ্চিমবঙ্গে অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে সিপিএম। ত্রিপুরায় গেরুয়া শিবিরের হাতেও পরাস্ত লাল ব্রিগেড।একদা লাল দুর্গ বলে পরিচিত এই দুই রাজ্যেই মসনদ হারিয়ে লোকবল খুইয়েছে সিপিএম। জাতীয়স্তরের আবস্থাও বেহাল। প্রায়শই আক্রান্ত হতে হচ্ছে কমরেডদের। জাতীয়স্তরেও লোকবলই না থাকার কারণে ভাটার টান আন্দোলনে। পশ্চিমবঙ্গ এবং ত্রিপুরার ইস্যু নিয়ে দিল্লিসহ সারা দেশেই বিক্ষোভ-আন্দোলনের করার কথা ঘোষণা করলেও তার দিনক্ষণ এখনও স্থির করতে পারেনি সিপিএম।
সিপিএম তথা বাম নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের লাগাতার আক্রান্ত হওয়ার অভিযোগ তুলছেন সিপিএমের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এই পরিস্থিতিতে এর প্রতিবাদে চলতি মাসেই জাতীয়স্তরে লড়াই-আন্দোলন করার কথা ঘোষণা করেছিল দল। সূত্রেখবর, এখনও পর্যন্ত এই ব্যাপারে সিপিএমের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব কোনওরকম আলোচনাতেই বসেননি। ফলে ঘোষিত কর্মসূচি বাস্তবায়িত করা নিয়েই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক সিপিএমের এক পলিটব্যুরো এবং কেন্দ্রীয় কমিটির নেতার কথায়, আন্দোলনের কর্মসূচির দিন চূড়ন্ত হয়নি। আসলে দিল্লিসহ সারা দেশেই এই ইস্যুতে বিক্ষোভ-মিছিল বা সমাবেশ করতে গেলে কত লোকবল প্রয়োজন, তা আগে আমাদের জেনে নেওয়া জরুরি। নাহলে কর্মসূচির দিনক্ষণ ঘোষণা হয়ে পর যদি বিক্ষোভ-অবস্থানে লোকের জমায়েত করা না যায়, তাহলে তা দল ও নেতৃত্বের কাছে বি়ড়ম্বনার হবে।
গত মাসের শেষ সপ্তাহে দিল্লিতে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকেই সিদ্ধান্ত হয়, জুলাইতে বাংলা ও ত্রিপুরার ঘটনা নিয়ে শাসক দল বিরোধী আন্দোলন করা হবে জাতীয়স্তরে। যদিও পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন নির্বাচনী ফলাফল নিয়ে সিপিএমের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এতটাই হতাশ যে, ওই বৈঠকে অন্যান্য রাজ্যের বিধানসভা এবং উপনির্বাচন নিয়ে আলোচনা করলেও পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত ও তারপরে মহেশতলা উপনির্বাচনের ফলাফল দলের আলোচনার মধ্যেই আসেনি। এরপর কর্মসূচি ঘোষণা করেও যদি তা বাস্তবায়িত করা না যায়, তাহলে তা বিশেষ করে দলের পশ্চিমবঙ্গ শাখার জন্য লজ্জাজনক হবে বলেই মত রাজনৈতিক মহলের।
রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচন সংক্রান্ত ইস্যুতে জাতীয়স্তরে ইতিমধ্যেই আন্দোলনের কর্মসূচি গ্রহণ করেছে বিজেপি। গত মাসে টানা সাতদিন দিল্লিতে বিক্ষোভ-মিছিল করেছে গেরুয়া শিবির। চলেছে ধর্না অবস্থানও।
পশ্চিমবঙ্গে দ্বিতীয় শক্তির জন্য জোর লড়াই লাল ও গেরুয়া শিবির মধ্যে। এই পরিস্থিতিতে শাসক বিরোধী লড়াইয়ে সিপিএমের থেকে কিছুটা এগিয়ে গেল বিজেপি।