প্রয়োজনীয় যোগ্যতা থাকলে রাজ্যের পার্শ্ব শিক্ষকরা স্থায়ী হতে পারেন। তাঁদের বেতনও বাড়তে চলেছে। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন। স্কুলশিক্ষা দপ্তর সূত্রে খবর, আইনি দিক খতিয়ে দেখে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে।
তৃণমূল সমর্থিত পার্শ্ব শিক্ষকদের প্রথম রাজ্য সম্মেলন হচ্ছে ৯ জুলাই। কলকাতার নেতাজি ইন্ডোরে সেই সভায় আসবেন প্রায় কুড়ি হাজার শিক্ষক। সভার প্রস্তুতি নিয়ে উদ্যোক্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন শিক্ষামন্ত্রী। বেতন বাড়ানো-সহ স্থায়ীকরণের বিষয়ে আলোচনা হয়। প্রসঙ্গত, রাজ্যে ৪৮ হাজারের কিছু বেশি পার্শ্ব শিক্ষক প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিক স্তরে আছেন। বহুদিন ধরে তাঁরা বিভিন্ন দাবি জানাচ্ছেন। প্রশ্নের উত্তরে পার্থবাবু বলেন, “পার্শ্ব শিক্ষকদের বিষয়ে রাজ্য সরকার সহানুভূতিশীল। তাঁদের দাবিগুলি বিবেচনা করা হচ্ছে। বেতন বাড়ানো ও যোগ্যতার নিরিখে স্থায়ীকরণের বিষয়টিও বিবেচনাধীন। মুখ্যমন্ত্রী নিজেও বিষয়টিতে সহানুভূতিশীল।”
প্রসঙ্গত, স্কুলশিক্ষা দপ্তরের সর্বশিক্ষা অভিযানের অধীনে পার্শ্ব শিক্ষক নিয়োগ করা হয়। উচ্চ প্রাথমিকে ৮১৮৬ ও প্রাথমিকে ৫৯৯৪ টাকা বেতন পান তাঁরা। বাম আমলের নিয়ম বদলে এই শিক্ষকদের ৬০ বছর পর্যন্ত চাকরির নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে। আগের তুলনায় কিছুটা বেতনও বেড়েছে। তবে বিভিন্ন দাবিতে আদালতে মামলা করেছে পার্শ্ব শিক্ষকদের একটি অংশ। তাঁদের বক্তব্য, অন্য শিক্ষকদের মতো একই পরিশ্রম করেও পার্শ্ব শিক্ষকরা যোগ্য সম্মান এবং যোগ্য বেতন পান না। ‘সমকাজে সমবেতন’-এর দাবি উঠেছে। রাজ্যের বিশাল সংখ্যক পার্শ্ব শিক্ষক নেতাজি ইন্ডোরে অনুষ্ঠানের দিকে তাকিয়ে আছেন। শিক্ষামন্ত্রী সেই সভা থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন কিছু ঘোষণা করতে পারেন। রাজ্য পার্শ্ব শিক্ষক সমন্বয় সমিতির সাধারণ সম্পাদক শামিম আখতার এ প্রসঙ্গে বলেন, “আমরা ৯ তারিখের দিকে চোখ রাখছি। দাবি না মানা হলে নবান্ন অভিযান করব।”
তবে পার্থবাবুর সঙ্গে বৈঠক শেষে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন তৃণমূলপন্থী পার্শ্ব শিক্ষকরা। ৯ তারিখ সরকারিভাবে নয়া বিষয় ঘোষণা হবে বলে মনে করছেন তাঁরা। দূরশিক্ষার মাধ্যমে এখন দু’বছরের ডিএল-এড কোর্স করানো হচ্ছে পার্শ্ব শিক্ষকদের। উচ্চমাধ্যমিকে ৫০ শতাংশ নম্বর ও শিক্ষক প্রশিক্ষণ ডিগ্রি থাকলে পার্শ্ব শিক্ষকদের স্থায়ীকরণে সমস্যা হবে না বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। তবে স্থায়ী তকমা দিতে হলে কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমতি লাগবে। সেই অনুমতি আসবে কি না তা নিয়ে সন্দিহান শিক্ষা মহলের অন্য একটি অংশ। তৃণমূল শিক্ষা সেলের সদস্যরা এই বিষয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। একইসঙ্গে আছে আদালতের একাধিক মামলা। পার্শ্ব শিক্ষকদের বেতন বৃদ্ধি ও স্থায়ীকরণ নিয়ে এখন মামলা চলছে।