রাশিয়া -৩
ইজিপ্ট -১
সেন্ট পিটার্সবার্গে ‘এ’ গ্রুপের ম্যাচে ৩-১ গোলে জিতেছে রাশিয়া। এই জয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডের পথে আরেক ধাপ এগিয়ে গেছে স্তানিস্লাভ চেরচেসভের শিষ্যরা।
১৯৮২ আসরের পর বিশ্বকাপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে জিতল রাশিয়া। এই জয়ে ১৯৮৬ আসরের পর প্রথমবারের মতো গ্রুপ পর্ব পার হওয়ার আশা জাগালো দলটি। সৌদি আরবের কাছে উরুগুয়ে না হারলেই দ্বিতীয় রাউন্ড নিশ্চিত হয়ে যাবে স্বাগতিকদের।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে কাঁধে চোট পাওয়ার পর প্রথমবারের মতো খেলেন মহামেদ সালাহ। দ্বিতীয়ার্ধে পেনাল্টি থেকে গোলও করেন লিভারপুলের এই তারকা ফরোয়ার্ড। তবে টুর্নামেন্টে দলের দ্বিতীয় হার ঠেকাতে পারেননি তিনি।
উরুগুয়ের কাছে ১-০ ব্যবধানের হার দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করা মিশর এই টুর্নামেন্টে ৬ ম্যাচ ধরে জয়শূন্য।
সেন্ট পিটার্সবার্গ স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার দুই দলের গতিময় ফুটবলে শুরু থেকেই জমে ওঠে ম্যাচ। টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচে সৌদি আরবকে ৫-০ গোলে উড়িয়ে দেওয়া রাশিয়া একটু এগিয়ে ছিল বল দখলে। সুযোগও বেশি তৈরি করে স্বাগতিকরাই।
তবে সালাহকে ফিরে পেয়ে উজ্জীবিত মিশরও পাল্টা আক্রমণে ছড়ায় ভীতি। তবে ফুটবলে দুই দলের প্রথম দেখায় পেরে উঠেনি আফ্রিকার দলটি।
সপ্তম মিনিটে রাশিয়ার আলেকসান্দার গোলোভিনের বাঁকানো শট একটুর জন্য লক্ষ্যে থাকেনি। পঞ্চদশ মিনিটে একই ভাবে চেষ্টা করেন ত্রেজেগে। মিশরের মিডফিল্ডারের বাঁকানো শট বার ঘেঁষে চলে যায় বাইরে।
প্রতিপক্ষের রক্ষণে গিয়ে খেই হারাচ্ছিল রাশিয়া আর মিশরের আক্রমণগুলো। দূরপাল্লার শটে গোলরক্ষকদের পরীক্ষা নেওয়ার চেষ্টা করে তারা। একটাও থাকেনি লক্ষ্যে।
সালাহকে খুব একটা জায়গা দেয়নি স্বাগতিকরা। এর মাঝেও ৪২তম মিনিটে ডি-বক্সের মুখ থেকে বাঁ পায়ে শট নেন লিভারপুলের এই ফরোয়ার্ড। দূরের পোস্ট দিয়ে বাইরে চলে যায় বল।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই এগিয়ে যায় রাশিয়া। ৪৭তম মিনিটে গোলোভিনের ক্রস বিপদমুক্ত করতে গিয়ে উল্টো নিজেদের জালে পাঠিয়ে দেন আহমেদ ফাতহি। চলতি আসরে এটি পঞ্চম আত্মঘাতী গোল।
আর্তেম জুবাকে লক্ষ্য করে ক্রস করেন গোলোভিন। ক্লিয়ার করতে গিয়ে অধিনায়কের হাঁটুতে লেগে দিক পরিবর্তন করে বল বার ঘেঁষে চলে যায় জালে। ডাইভ দিয়ে চেষ্টা করেছিলেন গোলরক্ষক; কিন্তু নাগাল পাননি।
মিশরের আক্রমণের ঝাপটা সামলে ৫৯তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে রাশিয়া। বাই লাইন থেকে মারিও ফের্নান্দেসের ক্রসে অরক্ষিত দেনিস চেরিশেভ ঠিকানা খুঁজে নেন।
চলতি আসরে ভিয়ারিয়াল মিডফিল্ডারের এটা তৃতীয় গোল। এই গোলে সর্বোচ্চ গোলদাতাদের তালিকার শীর্ষে রোনালদোর পাশে বসলেন তিনি।
তিন মিনিট পর ব্যবধান আরও বাড়ান জুবা। মাঝমাঠ থেকে ইলিয়া কুতেপভের বাড়ানো বল বুক দিয়ে নামিয়ে একজনকে কাটিয়ে গড়ানো শটে জাল খুঁজে নেন এই ফরোয়ার্ড। এবারের আসরে এটা তার দ্বিতীয় গোল।
৭৩তম মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করে ব্যবধান কমান সালাহ। তাকেই ডি-বক্সে ফাউল করায় ভিএআর প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে স্পট কিকের সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন রেফারি। ঠাণ্ডা মাথায় চমৎকার শটে বল জালে পাঠান সালাহ।
বাকি সময়ে দারুণ চেষ্টা করলেও ব্যবধান কমাতে পারেনি মিশর। রক্ষণে মনোযোগ বাড়ানোয় শেষের দিকে আর সেভাবে আক্রমণ করতে পারেনি রাশিয়া।
আগামী সোমবার নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে উরুগুয়ের বিপক্ষে খেলবে রাশিয়া। একই দিন সৌদি আরবের মুখোমুখি হবে মিশর।