সরকারি ব্যাঙ্কগুলোর মোট লোকসান ৮৭ হাজার ৩৫৭ কোটি টাকা ছাড়াল। ২১টি সরকারি ব্যাঙ্কের মধ্যে ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে কেবল ইন্ডিয়ান ব্যাঙ্ক এবং বিজয়া ব্যাঙ্ক লাভের মুখ দেখেছে। ইন্ডিয়ান ব্যাঙ্কের লাভের পরিমাণ এক হাজার ২৫৮ কোটি ৯৯ লক্ষ টাকা এবং বিজয়া ব্যাঙ্কের লাভ হয়েছে ৭২৭ কোটি ২ লক্ষ টাকা। সম্প্রতি ব্যাঙ্কগুলোর পক্ষে আর্থিক অবস্থা সংক্রান্ত রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানেই লোকসানের ভয়াবহ চিত্র সামনে এসেছে। দেখা যাচ্ছে, ১৯টি ব্যাঙ্কের মোট লোকসান ৮৭ হাজার ৩৫৭ কোটি টাকা ছাপিয়েছে। অথচ, ২০১৬-১৭ সালে ২১টি ব্যাঙ্কের মোট লাভের পরিমাণ ছিল ৪৭৩ কোটি ৭২ লক্ষ টাকা।
গত অর্থবর্ষে পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের মোট লোকসানের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ১২ হাজার ২৮৩ কোটি টাকা। ২০১৬-১৭ অর্থবর্ষে পিএনবি এক হাজার ৩২৪ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা লাভ করেছিল। হীরে ব্যবসায়ী নীরব মোদি এবং তাঁর মামা মেহুল চোকসির পিএনবি-র প্রায় ১৩ হাজার কোটি টাকা না মিটিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। লোকসানের পিছনে সেই কেলেঙ্কারির প্রভাব পড়েছে। লোকসানের দিক দিয়ে পিএনবি-র পরেই রয়েছে আইডিবিআই ব্যাঙ্ক। তাদের লোকসানের মোট পরিমাণ দাঁড়িয়েছে আট হাজার ২৩৭ কোটি ৯৩ লক্ষ টাকা। ২০১৬-১৭ অর্থবর্ষেও আইডিবিআই লোকসানে চলেছিল। সেবার তাদের মোট লোকসানের পরিমাণ ছিল ৫ হাজার ১৫৮ কোটি ১৪ লক্ষ টাকা। দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার মোট লোকসান ছ’হাজার ৫৪৭ কোটি টাকা। আগের অর্থবর্ষে এসবিআইয়ের মোট লাভ ছিল ১০ হাজার ৪৮৪ কোটি ১ লক্ষ টাকা।
রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক গুলোর এই বিপুল পরিমাণ লোকসানের পিছনে সব থেকে বড় কারণ দেশের বৃহৎ কর্পোরেট হাউসগুলি। এরা সরকারের হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে ফেরত দিচ্ছে না।এনপিএ বেড়েছে বিপুল পরিমাণে। সাধারণ গরিব খেটে খাওয়া মানুষের থেকে ঋণ আদায়ে ব্যাঙ্কের যা তাৎপর্য তা সিকি ভাগও দেখা যাচ্ছে না এই বড় হাউসগুলির ক্ষেত্রে। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক গুলির বিপুল লোকসান হওয়া সত্ত্বেও লালিত মোদী- বিজয় মালিয়া- নীরব মোদিরা কেন ছাড় পেয়ে যাচ্ছেন?