বেসরকারি ক্ষেত্রের পেশাদারদের জন্যও এ বার সরকারি পদের দরজা খুলে দিল নরেন্দ্র মোদী সরকার।
অর্থ থেকে বিমান মন্ত্রক, জাহাজ থেকে সড়ক পরিবহণ, কৃষি থেকে বাণিজ্যর মতো গুরুত্বপূর্ণ ১০টি মন্ত্রকে যুগ্ম-সচিব পদে বেসরকারি ক্ষেত্রের পেশাদারদের নিয়োগ করা হবে। বরাবরই এই সব পদ আইএএস-দের জন্য নির্দিষ্ট। মোদী সরকারের যুক্তি, নতুন ভাবনা, প্রশাসনে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি এবং অফিসারদের অভাব মেটাতেই এই সিদ্ধান্ত। প্রধানমন্ত্রী দফতরের প্রতিমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহ বলেন, ‘‘যেখান থেকেই হোক, সেরা প্রতিভাদের কাজে লাগানোই উদ্দেশ্য।’’ তিন বছরের চুক্তিতে নিয়োগ হবে। মাপকাঠি হল চল্লিশের উপর বয়স এবং সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে ১৫ বছরের অভিজ্ঞতা। বেতনও মিলবে যুগ্ম-সচিবদের সমানই।
তাঁর প্রধানমন্ত্রিত্বের চার বছর পেরিয়ে গেলেও সরকারের কাজে গতি আসেনি বলে কিছু দিন আগেই ক্ষোভ জানিয়েছিলেন মোদী। আমলারা যুক্তি দিয়েছেন, যুগ্ম-সচিব পদে অফিসারের অভাব। তাঁরাই মন্ত্রিসভার নোট, ফাইল তৈরি করেন। কর্মিবর্গ দফতরের হিসেবে, আইএএস-দের সাড়ে ছয় হাজার অনুমোদিত পদ থাকলেও হাজার দেড়েক পদ ফাঁকাই পড়ে রয়েছে।
মোদী সরকারের এই সিদ্ধান্তে আইএএস-দের বড় অংশই ক্ষুব্ধ। আইএএস অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন এ নিয়ে আলোচনায় বসবে। সরকারের যুক্তি, সচিবদের একটি কমিটি এবং নীতি আয়োগই এর সুপারিশ করেছে। এর আগে আয়ুর্বেদ চিকিৎসক রাজেশ কোটেচাকে আয়ুষ মন্ত্রকে, বিশ্বব্যাঙ্কের পরমেশ্বর আইয়ারকে স্বচ্ছ ভারত অভিযানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
বিজেপি শেষ বেলায় প্রশাসনে ‘সঙ্ঘী’-দের ঢোকানোর চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ তুলে বিরোধীরা বলছেন, ‘‘ইউপিএসসি, এসএসসি-কে এড়িয়ে যাওয়া হচ্ছে কেন? তফসিলি জাতি, জনজাতি, ওবিসি-দের জন্য সংরক্ষণেরই বা কী হবে?’’ বিরোধী নেতাদের আরো অভিযোগ, ‘‘এর পর তো বিজেপি বিনা ভোটে প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভার নিয়োগ চাইবে!’’
এই পদক্ষেপ কি প্রশাসনের সঙঘীকরণ এর প্রথম ধাপ? এই প্রশ্নে সরগরম দেশের রাজনীতি।