‘হ্যান্ড অফ গড’-এর জন্য নাকি গ্রেফতার হতে পারতেন দিয়েগো মারাদোনা৷ রাশিয়া বিশ্বকাপ শুরুর আগে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমনটাই বলেছেন ১৯৮৬ বিশ্বকাপের নায়ক৷ বর্তমান সময়ে রেফারিরা নির্ভুল সিদ্ধান্তের জন্য ভিডিও অ্যাসিস্টেন্ট রেফারি (VAR) সাহায্য নিয়ে থাকেন৷ ১৯৮৬ বিশ্বকাপে এই ভিএআর প্রযুক্তি ব্যবহার করা হলে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে তাঁর গোল সহজেই বাতিল হত বলে মনে করেন মারাদোনা৷ শুধু তাই নয়, মজা করে মারাদোনা বলেছেন ‘ভিএআর প্রযুক্তি থাকলে সেদিন আমি গ্রেফতারও হতে পারতাম৷ ৮০ হাজার দর্শকদের সামনে চুরি করা সম্ভব নয়৷’
২২ জুন, ১৯৮৬। মেক্সিকো বিশ্বকাপে কোয়ার্টারে মুখোমুখি দুই ‘চিরশত্রু’ ইংল্যান্ড-আর্জেন্টিনা। ম্যাচে প্রথমার্ধে দাপট দেখায় আর্জেন্টিনা৷ ইংলিশ গোলরক্ষক পিটার শিল্টন অবশ্য দক্ষতার সঙ্গে তেকাঠির নীচে অপ্রতিরোদ্ধ ছিলেন৷ গোলশূন্য অবস্থায় বিরতিতে যায় দুই দল। এরপর দ্বিতীয়ার্ধ দেখল মারাদোনা ম্যাজিক৷ দ্বিতীয়ার্ধে দুটি গোল করেন মারাদোনা৷ ইংল্যান্ডকে ২-১ ব্যবধানে হারিয়ে সেমিফাইনালে চলে যায় নীল-সাদা আর্মি৷
ম্যাচের বয়স তখন ৫১ মিনিট। মাঝমাঠের একটু সামনে বল পেয়ে দৌড় দেন দিয়েগো৷ প্রতিপক্ষের এক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে দুজনের মাঝখান দিয়ে ডি-বক্সের সামনে চলে আসেন৷ ইংল্যান্ডের রক্ষণভাগের ফুটবলারদের মেপে নিয়ে বলটা পাস দেন ভালদানোকে, নিজে ঢুকে পড়েন বক্সের ভেতরে। কিন্ত বল পায়ে রাখতে পারেননি ভালদানো, ইংলিশ ডিফেন্ডার স্টিভ হজ বলের দখল নিয়ে ক্লিয়ার করার বদলে উল্টে বল গোলকিপারে দিকে বল ঠেলে দেন৷ সেটা ধরতেই এগিয়ে এলে ইংলিশ গোলরক্ষক শিল্টনকে পরাস্ত করে লাফ দেন দিয়েগো৷ এরপর মারাদোনার বাঁ-হাতে লেগে বল জালে জড়িয়ে যায়৷
বিতর্কিত গোল নিয়ে ইংল্যান্ড অভিযোগ করলেও ততক্ষণ সেলিব্রেশন শুরু করে দিয়েছে আর্জেন্তিনা৷ রেফারিও গোলটিকে নায্য বলেই ঘোষণা করেন৷ ম্যাচ শেষে গোলটিকে ‘হ্যান্ড অফ গড’ বলে বর্ণনা করেন দিয়েগো৷ মারাদোনা দাবী করেছিলেন, ‘হাত নয় হেডেই গোল করেছেন তিনি’৷
তিন দশক পর অবশ্য মতামত পাল্টেছেন দিয়েগো৷ ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের এক সাক্ষাৎকারে দিয়োগোর কাছে জানতে চাওয়া হয়, বর্তমান সময়ের মতো ভিএআর থাকলে হ্যান্ড অফ গড নিয়ে আপনি কী যুক্তি দিতেন? প্রশ্ন শুনে হাসতে হাসতে তিনি উত্তর দেন, ‘সেসময় ভিএআর থাকলে কোনও কথাই হতো না, জেলে যেতে হত আমায়!’