পঞ্চায়েত নির্বাচনে রাজ্যজুড়ে কং-রেড জোট নিয়ে সিপিএমকে তুলোধোনা ফরওয়ার্ড ব্লকের। কলকাতায় দলের সদর দফতরে সাংবাদিক বৈঠক করে ফরওয়ার্ড ব্লকের রাজ্য সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায় বলেন,’ পঞ্চায়েত নির্বাচনে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ফ্রন্ট শরিকদের গুরুত্ব না দিয়ে কংগ্রেসের সাথে জোট করে লড়াই করছে সিপিএম। তাতে বামফ্রন্টের ঐক্য নষ্ট হচ্ছে। লোকসভাতেও যদি সিপিএম একইভাবে কংগ্রেসের হাত ধরে তা হলে বামফ্রন্টের অন্যরূপ হবে।”
একই সঙ্গে তিনি জানান যে প্রসঙ্গে সিপিএম নেতৃত্বকে চিঠি দিয়ে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসা হবে। কারণ বামফ্রন্টের প্রতিষ্ঠা থেকেই ফরওয়ার্ড ব্লক সঙ্গে আছে। সব মিলিয়ে রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, এরপরেও যদি কং-রেড জোট হয় তা হলে ফ্রন্টে ভাঙন ধরা শুরু শুধু সময়ের অপেক্ষা।
রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, সামনেই লোকসভা নির্বাচন। তার আগে ফরওয়ার্ড ব্লকের এহেন ঘোষণা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। নরেনবাবুরা কৌশলে সিপিএম এর ওপর চাপ তৈরি করতেই কার্যত হুমকি দিয়ে রাখলেন যে এর পরেও জোট হলে প্রয়োজনে লোকসভায় এক লড়বেন তাঁরা। একই সঙ্গে বামফ্রন্ট থাকা সত্তেও নতুন করে সংহতি কমিটি তৈরি করা হচ্ছে। তা হলে কি ফ্রন্টে আস্থা হারিয়েই এই সিদ্ধান্ত? এ প্রসঙ্গে নরেনের যুক্তি, ফ্রন্টের মধ্যে ঐক্যকে আরও দৃঢ় করতে এবং জোরালো আন্দোলনের রূপরেখা স্থির করতেই এই সিদ্ধান্ত। তবে নরেনবাবু মুখে যায় বলুক না কেন তাঁদের এই ধরণের সিদ্ধান্ত থেকেই স্পষ্ট সিপিএম এর ওপর ক্ষিপ্ত ফরওয়ার্ড ব্লক। একই সঙ্গে আস্থা নেই ফ্রন্টের উপর। সেই কারণেই নতুন সংহতি কমিটি। ফরওয়ার্ড ব্লকের সম্পাদক আরও জানান পঞ্চায়েতে পুরুলিয়া, মুর্শিদাবাদ, উত্তর দিনাজপুর সহ বিভিন্ন জেলায় শরিকদের গুরুত্ব না দিয়েই কংগ্রেসের সাথে জোট করে আসন ছাড়া হয়েছে। ফলস্বরূপ সেইসব জায়গায় সিপিএম এর পরাজয় হয়েছে। অথচ যে সব জায়গায় ফ্রন্টগতভাবে লড়াই করা হয়েছে সেখানে ফল ভালো হয়েছে। একই সঙ্গে তাঁর যুক্তি কংগ্রেসের সঙ্গে জোট মেনে নিতে পারছেন না প্রকৃত বামমনস্ক মানুষেরা। তাই কিছু সংখ্যক মানুষ তৃণমূলে যাচ্ছে আবার একটা অংশ বিজেপির দিকে ঝুঁকছে। সেই কারণেই বামফ্রন্টের মধ্যে ঐক্যের প্রয়োজন।