থেকে গেল শতাব্দীর সেরা অসংখ্য গোল, থেকে গেল সেই ‘হ্যান্ড অফ গড’, থেকে গেল সবুজ মাঠে অসংখ্য মন মাতানো ড্রিবল, ছোটোখাটো চেহারায় ডিফেন্ডারদের মাত দিয়ে অসংখ্য গোলের স্মৃতি। কিন্তু থাকলেন না সেইসব ইতিহাসের স্রষ্টা দিয়েগো মারাদোনা। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মাত্র ৬০ বছর বয়সে প্রয়াত হলেন বিশ্বের ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়।
আর্জেন্তিনা সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, বুধবার হৃদরোগে আক্রান্ত হন মারাদোনা। খবর দেওয়া হয় হাসপাতালে। কিছুক্ষণের মধ্যেই অ্যাম্বুলেন্স পৌঁছেও যায়। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। বাড়িতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ফুটবলের রাজপুত্র। সে কথা নিশ্চিত করেছেন তাঁর এজেন্ট মাতিয়াস মোরলা। অথচ সপ্তাহদুয়েক আগেই তিনি জানিয়েছিলেন, মারাদোনা ভালো ছিলেন। নিজের রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়েও ইচ্ছুক ছিলেন ৮৬’র বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক।
২ সপ্তাহ আগেই অস্ত্রোপচার হয়েছিল ফুটবল রাজপুত্রের৷ সেখানে আর্জেন্তাইন তারকার ব্রেন থেকে ক্লট বার করা হয়েছিল৷ এরপরেও তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় জানিয়েছিলেন যে, তিনি ভালো আছেন৷ পৃথিবীর সর্বকালীন সেরা ফুটবলারদের অন্যতম আর্জেন্টিনাকে ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপ জিততে সাহায্য করেছিলেন৷ নিজের গগনচুম্বী কেরিয়ারের যেটা একটা মাইলফলক৷ এছাড়াও, ক্লাব হিসেব বোকা জুনিয়ার্স , নাপোলি, বার্সেলোনার হয়ে চমৎকার পারফরম্যান্স দিয়েছেন৷ সারা পৃথিবীর মানুষ ফুটবল মাঠে তাঁর চলন বলনে মুগ্ধ ছিল। তবে ১৯৮৬ সালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে তাঁর হ্যান্ড অফ গড তাঁকে বিখ্যাত করে রেখেছেন৷
কলকাতার সঙ্গেও হৃদয়ের সংযোগ ছিল ফুটবল রাজপুত্রের। ভারতীয় ফুটবলের পীঠস্থান কলকাতায় নিজের জীবনকালে ২ বার এসেছেন মারাদোনা। প্রথমবার ২০০৮ সালে পা রেখেছিলেন কলকাতায়। ঘুরে দেখেছিলেন যুবভারতী স্টেডিয়াম। গিয়েছিলেন মোহনবাগান মাঠেও। দু’জায়গাতেই তাঁকে দেখতে উপচে পড়েছিল অগণিত ভক্ত। এরপর ২০১৭ সালে ফের আসেন কলকাতায়। বারাসতে একাডেমি উদ্বোধনের পাশাপাশি তৃণমূল নেতা সুজিত বসুর উদ্যোগে তৈরি নিজের পূর্ণাঙ্গ মূর্তিও উদ্বোধন করেন তিনি। কপালে লাল তিলক, গলায় ফুলের মালা জড়িয়ে আপন করেছিলেন শহরের সংস্কৃতিকে। তাঁর এই আকস্মিক মৃত্যুর খবরে আজ স্তব্ধ গোটা কলকাতাও।