“ধর্ষণের এক ও একমাত্র শাস্তি হওয়া উচিত পুরুষাঙ্গ কর্তন। সোমবার এমনই মন্তব্য করলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। ইমরান খানের এই মন্তব্যে প্রশ্ন উঠেছে, কোনও প্রধানমন্ত্রী কি কোনও অপরাধের ক্ষেত্রে এ ধরনের নিদান দিতে পারেন? কেউ বা বলেছেন, এমন তালিবানি বিচার পাকিস্তানেই সম্ভব। আইনরক্ষা ও সমাজের নিরাপত্তা বজায় রাখা যেখানে রাষ্ট্রব্যবস্থার চূড়ান্ত লক্ষ্য হওয়া উচিত, সেখানে খোদ প্রধানমন্ত্রীর প্রকাশ্যে এমন মন্তব্য প্রশ্ন তুলে দিয়েছে আইনকানুনের সুরক্ষা নিয়ে।
এ মন্তব্যের উৎস এক নারকীয় ঘটনা। ৯ সেপ্টেম্বর রাতে দুই সন্তানকে নিয়ে গাড়ি চালিয়ে লাহোর থেকে গুজরানওয়ালা প্রদেশে যাচ্ছিলেন ৩০ বছরের এক তরুণী। হাইওয়েতে হঠাৎ তেল শেষ হয়ে যাওয়ায় তিনি যখন স্বামীকে ফোন করছেন, পুলিশের সাহায্য খুঁজছেন, তখন দুই যুবক এসে সন্তানদের সামনে মহিলাকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। মহিলার সঙ্গে থাকা টাকা ও কার্ডও কেড়ে নিয়ে পালায় তারা। এখানেই শেষ নয়, অভিযোগ, এই ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ পাল্টা দোষ দেয় ধর্ষিতা ওই মহিলাকে, কেন তিনি কোনও পুরুষসঙ্গী ছাড়া একা রাতের রাস্তায় বেরিয়েছেন!
ইমরান খান মন্তব্য করেন, অপরাধের তীব্রতা অনুযায়ী ‘ডিগ্রি’ নির্ধারণ করে রাসায়নিক ভাবে বা অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে পুরুষাঙ্গ বাদ দেওয়া উচিত বলে মনে করেন বলে সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন তিনি। এও বলেন, বহু দেশেই এই শাস্তি প্রচলিত।
দুনিয়ার ইতিহাসের দিকে তাকালে বোঝা যায়, সমাজে যখন উগ্রতা বেড়ে যায়, তখন দুটো জিনিস ঘটে। এক, যৌন হিংসার ঘটনা বাড়তে থাকে এবং দ্বিতীয়ত, পারিবারিক কাঠামো ভেঙে যায়। পাকিস্তানেও তাই হচ্ছে বলে মনে করছেন তিনি। উদাহরণ দিয়ে বলেন, ইংল্যান্ডের সমাজে উগ্রতা বেড়ে যাওয়ায় ডিভোর্সের রেট বেড়ে গেছে ৭০ শতাংশ।
তবে চাপের মুখে পড়ে বৃহস্পতিবারই ধর্ষণে জড়িত থাকার অভিযোগে ১৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার অভিযুক্ত দু’জনের ছবিও প্রকাশ করে পুলিশ। তাদের ধরিয়ে দিলে ২৫ লাখ পাকিস্তানি মুদ্রা পুরস্কারও ঘোষণা করা হয়। রবিবার এক অভিযুক্ত আত্মসমর্পণ করে বলে জানা গেছে, তবে সে এখনও অপরাধ স্বীকার করেনি।