ইতিমধ্যেই অসম, বিহার বন্যায় বিপর্যস্ত। বর্ষার শেষ দিকে বন্যার আশঙ্কা আরও বাড়িয়ে দিল মৌসম ভবনের পূর্বাভাস। শুক্রবার মৌসম ভবন জানিয়েছে, বর্ষার শেষ দু’মাস মিলিয়ে স্বাভাবিকের চেয়ে ৪% বেশি বৃষ্টিপাত হতে পারে। অথচ, অগস্টে ৩% কম বৃষ্টি হতে পারে। অর্থাৎ, সেপ্টেম্বরে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেকটাই বেশি বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা। এমনিতে নদী-খাল-বিল ভরে যাওয়ায় বর্ষার শেষে বন্যার আশঙ্কা বেশি থাকে। এ বার জুন থেকেই বর্ষা স্বমেজাজে থাকায় অনেক রাজ্য বা জেলাতেই বৃষ্টি উদ্বৃত্ত। তাই এবার বর্ষার শেষদিকে বন্যার আশঙ্কা থাকছে।
তেমনই ইঙ্গিত দিচ্ছে আবহাওয়া দফতর। ৪ আগস্ট নাগাদ বাংলা, বাংলাদেশ, উড়িষ্যা লাগোয়া বঙ্গোপসাগরে একটি নিম্নচাপ সৃষ্টি হতে পারে। এর প্রভাবে উত্তরবঙ্গে থাকা মৌসুমি অক্ষরেখাও দক্ষিণবঙ্গে সরে আসবে। ফলে দক্ষিণবঙ্গ, বিশেষ করে উপকূল এবং উড়িষ্যা লাগোয়া জেলাগুলিতে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়তে পারে। তবে আপাতত যা ইঙ্গিত, বাংলার চেয়ে উড়িষ্যায় বেশি বৃষ্টি দিতে পারে নিম্নচাপ।
জুলাই পর্যন্ত দেশে বর্ষা একেবারে স্বাভাবিক। তবে জুন শেষ হয়েছিল ১৮% অতিরিক্ত বৃষ্টি নিয়ে। জুলাই জুড়ে বৃষ্টি হয়েছে হিমালয় লাগোয়া অঞ্চলে। তাই দেশের বেশ কিছু জায়গায় বিক্ষিপ্ত ভাবে ঘাটতি তৈরি হয়েছে। যেমন, বাংলার উত্তরে ৪১% অতিরিক্ত বৃষ্টি হলেও, দক্ষিণবঙ্গে ৬% ঘাটতি রয়েছে। এর মধ্যে পূর্ব মেদিনীপুর (৪৪%), দক্ষিণ ২৪ পরগনা (৩৮%), পশ্চিম মেদিনীপুর ও হাওড়ায় (২১%) ঘাটতি অনেকটাই। ঘাটতির জন্য আমন চাষে সমস্যা হয় কি না, সেদিকে নজর রাখছেন কৃষি বিশেষজ্ঞরা। সাধারণত, ১৫ জুলাই থেকে ১৫ অগস্ট পর্যন্ত রোপণের কাজ চলে। তার মধ্যে উপকূলের জেলাগুলিতে বৃষ্টি হয়ে গেলে দুশ্চিন্তা কমে যাবে।
গত কয়েকদিন ধরেই উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি চলছে। আবহাওয়া বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, শনিবার প্রবল বৃষ্টি হবে উত্তরবঙ্গে। ইতোমধ্যেই পাহাড়ি নদীগুলির জলস্তর বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। কোনও কোনও এলাকা প্লাবিতও হয়েছে। ভেঙে গিয়েছে নদীর উপরের সেতুও। পাহাড়ি এলাকায় লাগাতার বৃষ্টির জেরে তাই ধস নেমে রাস্তা আটকে যেতে পারে বলে আশঙ্কা