অনেক দেশ ঘুরে এবার ভারতের আকাশ জুড়ে আলোর মায়া ছড়িয়ে দিতে আসছে ধূমকেতু নিওওয়াইস। সূর্য ডুবলেই উত্তর-আকাশে ঝুপ করে উদয় হবে নিওয়াইস। তার ঝলমলে লেজ দেখা যাবে খালি চোখেই। এমনটাই জানিয়েছেন, উড়িষ্যার ভুবণেশ্বর তারামণ্ডলের ডেপুটির ডিরেক্টর পাথানি সামন্ত।
১৪ জুলাই থেকে টানা ২০ দিন সন্ধ্যার আকাশে দেখা যাবে দুই লেজবিশিষ্ট অতি উজ্জ্বল এই ধূমকেতুকে। সৌরমণ্ডলের বাইরে সুদূর ওরট ক্লাউড থেকে একাই চলে এসেছে সি/২০২০ এফ৩। এটাই পোশাকি নাম। যদিও জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা নাম রেখেছেন নিওওয়াইস।
ভুবণেশ্বর প্ল্যানেটোরিয়ামের ডেপুটি ডিরেক্টর পাথানি সামন্ত বলেছেন, “প্রায় সাত হাজার পরে ব্রহ্মাণ্ডের হিমশীতল রাজ্য থেকে দিক ভুলে ছুটে এসেছে এমন ধূমকেতু। এতদিন সূর্যোদয়ের আগে উত্তর-পূর্ব আকাশে দেখা দিচ্ছিল নিওওয়াইস। ১৪ জুলাই থেকে উত্তর-পশ্চিম আকাশে সূর্যাস্তের পরেই তার আগুনে রূপ নিয়ে জ্বলে উঠবে। খালি চোখে দেখা যাবে প্রায় ২০ মিনিট। ভারতের আকাশে অতিথি হয়ে থাকবে টানা ২০ দিন”।
ওয়াশিংটন, ব্রিটেনের আকাশে এক ঝলক আলোর মায়া ছড়িয়ে দিয়েছে নিওওয়াইস। সন্ধ্যা নামলেই আকাশে কোথাও ক্ষীঁণ আলোর রেখা আবার কোথাও ঝিকিমিকি আলোর লেজ নিয়ে নিওয়াইসকে ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছে। এবার দেখা যাবে ভারতের আকাশ থেকেও।
জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বলছেন, ভারতের আকাশজুড়ে জুলাই থেকে অগস্ট অবধি জ্বলজ্বল করবে এই ধূমকেতু। তার দুই লেজ ভাসিয়ে গোটা উত্তর গোলার্ধ দাপিয়ে বেড়াবে। আগামী ২২-২৩ জুলাই পৃথিবীর মাথার উপর দিয়ে ভেসে যাবে। তখন সে থাকবে পৃথিবীর আরও কাছাকাছি। মাত্র ১০ কোটি কিলোমিটার দূরে। আরও বেশি উজ্জ্বল ও স্পষ্ট দেখা যাবে তার রূপ। রাতের আকাশে আলোর মায়া ছড়িয়ে দিয়ে যাবে নিওওয়াইস। ৩০ জুলাই থেকে তাকে দেখা যাবে সপ্তর্ষি মণ্ডলের কাছে। ৪০ ডিগ্রি অক্ষাংশে। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে। জুলাইয়ের শেষ থেকে ধীরে ধীরে তার আগুনে রূপ বর্ণহীন হতে থাকে। ভারতের আকাশ থেকে একটু একটু করে দূরে সরে যাবে এই অনাহুত অতিথি।
আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন থেকে নিওওয়াইসের রূপের ছটা দেখে মুগ্ধ নাসার নভশ্চর বব বেনকেন। টুইট করে নিওওয়াইসের এই ছবি তিনি দেখিয়েছেন। বব বলেছেন, যেন মনে হচ্ছে উৎসব হচ্ছে পৃথিবীর পিঠে। আতসবাজি ঝলসে উঠছে। নিস্তব্ধ, নিষ্প্রাণ, শূন্য মহাকাশ যেন আলোর জ্যোৎস্নায় স্নান করেছে।